শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Sex Cams

গার্মেন্টসে লেজেগোবরকাণ্ডে বকা খেলেন বাণিজ্যমন্ত্রী!




সারাদেশে সাধারণ ছুটি চলাকালীন অফিস আদালত বন্ধ থাকার মধ্যেই গার্মেন্টস খোলা রাখার জন্য বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশীর প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। ঢাকামুখী শ্রমিকস্রোতে করোনার সংক্রমণের ভয়াবহতা বাড়িয়ে দেয়ার পরিবেশ সৃষ্টির জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বাণিজ্যমন্ত্রীকে বলেছেন, তোমাদের কারণেই লেজেগোবরে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

সোমবার (৬ এপ্রিল) মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এমন ক্ষোভ প্রকাশ করেন বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে। প্রধানমন্ত্রীর বকা খেয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী আত্মপক্ষ সমর্থন করার চেষ্টা করলেও তা ধোপে টেকেনি। বরং প্রধানমন্ত্রী তার মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউসকে নির্দেশ দিয়ে বলেন, গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানের মালিকদের সঙ্গে বসে মাস্ক ও পিপিই বানায় এমন কারখানাগুলো খোলা রেখে বাকিগুলো বন্ধ করে দেবেন।

বৈঠক শেষে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মন্ত্রী বলেন, শুরু থেকেই প্রধানমন্ত্রী বাণিজ্যমন্ত্রীর ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। বাণিজ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, তুমি (টিপু মুনশী), সালাম মোর্শেদী আর রুবানা হক মিলে আজ এই ঘোলাটে পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছো। তোমাদের সমন্বয়হীনতার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

এ সময় বাণিজ্যমন্ত্রী অবশ্য বলার চেষ্টা করেন, তিনি গার্মেন্টস চালু রাখা কিংবা শ্রমিকদের ঢাকায় আনানো ও ফেরত পাঠানোর বিষয়ে জানেন না কিছু। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বাণিজ্যমন্ত্রীর এই আবদার না শুনে মুখ্য সচিবকে পরবর্তী নির্দেশ বাস্তবায়নের জন্য অর্থাৎ গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠান বন্ধের দায়িত্ব দেন।

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে টানা ২০ দিনের ছুটির মধ্যে সোমবার মন্ত্রিসভা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে অংশ নেয়া সবার মুখে ছিল মাস্ক। প্রত্যেকে সামাজিক নিরাপত্তা দূরত্ব বজায় রেখে আলাদা আলাদা টেবিলে বসেন।

অন্য সময় সব মন্ত্রী বৈঠকে থাকলেও এই বৈঠকে শুধু যাদের এজেন্ডা ছিল তারাই উপস্থিত ছিলেন। বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠকে একটি আইনের খসড়ার অনুমোদন ছাড়াও আসন্ন রমজানে অফিস সময় সাড়ে ৬ ঘণ্টা নির্ধারণ করা হয়।

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের বিষয়ে মন্ত্রিসভায় নতুন করে কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, যেখানে আক্রান্ত বেশি, সেখানে লকডাউন করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়াও লঘু সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের জেল থেকে ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে মন্ত্রিসভায়। এছাড়াও হত্যা, ধর্ষণ ও অ্যাসিড মামলার আসামি ছাড়া ইতোমধ্যে দীর্ঘদিন জেলখাটা ও লঘু অপরাধে দণ্ডিতদের মুক্তির নীতিমালা করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

রমজানে অফিস ৯টা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত : মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, পবিত্র রমজান মাসে সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে অফিস শুরু হবে সকাল ৯টায়। শেষ হবে বেলা সাড়ে ৩টায়। মাঝে দুপুর সোয়া ১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত জোহরের নামাজের বিরতি থাকবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, ব্যাংক, বিমা, অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ডাক, রেলওয়ে, হাসপাতাল, রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠান, কলকারখানার এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান যাদের সার্ভিস অতি জরুরি তারা নিজস্ব বিধিবিধান অনুযায়ী জনস্বার্থ বিবেচনা করে তাদের নিজস্ব অফিস সময়সূচি নির্ধারণ করবে।

রাসায়নিকযুক্ত মৎস্য বাজারজাতে শাস্তির মেয়াদ বাড়ছে: রপ্তানি বা অভ্যন্তরীণ বাজারে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থযুক্ত মৎস্য বা মৎস্য পণ্য বাজারজাত করলে শাস্তির মেয়াদ ও আর্থিক জরিমানা বাড়িয়ে মৎস্য ও মৎস্য পণ্য আইন (পরিদর্শন ও মাননিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০২০ এর খসড়া চ‚ড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, রপ্তানি বা অভ্যন্তরীণ বাজারে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থযুক্ত মৎস্য বা মৎস্য পণ্য বাজারজাত করলে শাস্তি বাড়িয়ে সর্বোচ্চ সাত বছর করা হয়েছে, তবে সেটি পাঁচ বছরের নিচে নয়। কারাদণ্ড বা পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড ও উভয় দণ্ড নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া ধারা ৩১, ৩২ ও ৩৪ ধারায় অপরাধ ও দণ্ডের বিধান রয়েছে। ৩৩ ধারায় পচা বা দূষিত মাছ বিক্রি করলে অনধিক ৫০ হাজার টাকা প্রশাসনিক জরিমানার বিধান রয়েছে।

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের মৎস্য ও মৎস্য পণ্যের বর্তমান রপ্তানি বাজার ধরে রাখা এবং নতুন বাজারে অনুপ্রবেশ, মানসম্পন্ন মৎস্য ও মৎস্য পণ্য আমদানি ও অভ্যন্তরীণ বাজারে বাজারজাতকরণের জন্য অধ্যাদেশটি প্রয়োজনীয় সংশোধন, পরিবর্ধন, পরিমার্জন ও রহিতক্রম করে বাংলা ভাষায় আইনের খসড়া প্রস্তুত করা হয়। প্রস্তাবিত আইনটিতে ৯টি অধ্যায়ে ৫০টি ধারা রয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল মেজারমেন্ট আইন ২০২০ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

সম্পাদক: শাহ সুহেল আহমদ
প্যারিস ফ্রান্স থেকে প্রচারিত

সার্চ/খুঁজুন: