রাজীব আহসান, কানাডা থেকে:
আমার ছোটবেলার দুই বন্ধু ডাক্তার ইকবাল ও ডাক্তার সঞ্জয়। করোনাকালীন এ সময়ের বলিষ্ঠ অকুতোভয় সম্মুখ যোদ্ধা তারা। মহামারীর এ দুর্যোগ মুহূর্তে ওদের ভূমিকা না বললেই নয়। ওরাসহ সকল সম্মুখ যোদ্ধাদের প্রতি আমার বিনম্র শ্রদ্ধা।
উন্নত বিশ্বে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশের গাড়ি হাসপাতালের সামনে সাইরেন বাজিয়ে সম্মুখ যুদ্ধের এসব যোদ্ধাদের আলাদাভাবে সম্মান প্রদর্শন করা হচ্ছে। গ্রোসারি স্টোরগুলো ওদের সম্মানে আলাদা লাইন করে দিচ্ছে। কোনো কোনো খাবারের দোকানে রয়েছে ৫০ শতাংশ ছাড়!
দুর্যোগময় এ মুহূর্তে কিছু একটা করা দরকার এবং বন্ধুদের প্রতি সম্মান আর ভালোবাসার দায় থেকেই ওদের জন্য সুদূর কানাডা থেকে পাঠিয়েছিলাম ‘মাস্ক N95’। ভেবেছিলাম এ যাত্রায় কাক আর কাকের মাংস খাবে না, তাই কৌশল নিয়ে মাস্কগুলো পাঠিয়েছিলাম একজন পুলিশ অফিসারের নামে।
ইমার্জেন্সি সার্ভিস হওয়ার কারণে পেয়েছিলাম ট্র্যাকিং নাম্বার। দুই বন্ধু প্রায় প্রতিদিনই ট্র্যাকিং চেক করেছি। আজ সিঙ্গাপুর, আজ আরব-আমিরাত, আজ অমুক এয়ারপোর্ট টু অমুক এয়ারপোর্ট। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ, ঢাকা এবং তারপর বন্ধুর হাতে। পূর্বনির্দেশ অনুসরণ করে অনেক আশা আর আকাঙ্খা নিয়ে প্যাকেট খোলা হলো, কিন্তু ভিতরে মাস্ক নেই।
বিধি বাম! মানবিকতার কোথায় আছি আমরা?
কোনো ভাষা নেই, কিছু বলার! কার কাছে চাইবো এর বিচার?
প্রকৃতি, না কি করোনাই করবে এর বিচার?
শুনেছি প্রকৃতির রাজ্যে যা কিছু ঘটে তা নাকি সব জীবের কল্যাণের জন্যই।জানি না এ মহাবিপর্যয়ের নেপথ্যে জগত সংসারের কি কল্যাণ লুকিয়ে আছে?
মনের অগোচরে কেবলই ভেসে আসছে, রবীন্দ্রনাথের গানের বিখ্যাত সেই দুটি লাইন-
“সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোন শোন পিতা। কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা…।”