আবুল কালাম মামুন:
যথাযথ মর্যাদায় এবং শোক ও শ্রদ্ধার মধ্য দিয়ে শনিবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করেছে প্যারিসস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস। মান্যবর রাষ্ট্রদূত জনাব কাজী ইমতিয়াজ হোসেন দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উপস্থিতিতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে দিনের কর্মসূচী শুরু করেন। এরপর জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। মান্যবর রাষ্ট্রদূত দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করেন।
অনুষ্ঠানের এ পর্বে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত এবং অন্যান্য ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ শেষে বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর পরিবারের সদস্যসহ ১৫ আগস্ট ১৯৭৫- এর অভিশপ্ত দিনে শাহাদাৎবরণকারী সকলের রূহের মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত এবং তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এবং জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো-এর মহাপরিচালক কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়।
কোভিড-১৯ অতিমারীর প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে দূতাবাসের সকল সদস্য শোক দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানটি একই সাথে ভার্চুয়াল মাধ্যমেও অনুষ্ঠিত হওয়ায় ফ্রান্স অাওয়ামীলীগ , প্যারিস মহানগর অাওয়ামীলীগ , যুবলীগ , ছাত্রলীগ , সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের , ও সাংবাদিক নেতৃবৃন্দসহ প্রবাসের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও গুণীজন অনলাইনে অংশগ্রহণ করেন।
দিবসটি উপলক্ষ্যে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের একটি বড় অংশ জুড়ে ছিল ভার্চুয়াল মাধ্যমে অংশগ্রহণকারী অতিথিবৃন্দের বঙ্গবন্ধুর জীবন ও দর্শনের উপর আলোচনা। আলোচনা পর্বে বক্তাগণ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিসংগ্রাম এবং বাঙালি জাতি গঠনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব ও অবদানের কথা তুলে ধরেন। বক্তাগণ এ হত্যাকান্ডের পিছনে যারা জড়িত ছিলেন তাঁদের স্বরূপ উদঘাটনের জন্য একটি কমিশন গঠনের আহবান জানান। বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ ও জনমানুষের জন্য ত্যাগ ও সংগ্রামের চেতনা বুকে ধারণ করে জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন প্রবাসী বক্তাগণ।
ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের মান্যবর রাষ্ট্রদূত জনাব কাজী ইমতিয়াজ হোসেন তাঁর বক্তব্যের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন যে, বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী, দৃঢ় ও আপোষহীন নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীনতা ও মুক্তি অর্জন করেছে। তিনি বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশ এবং বাঙালি জাতি গঠনে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা তুলে ধরেন। একটি গর্বিত জাতি স্বতন্ত্র পরিচয়ে পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর যে দুর্লভ সম্মান বাঙালি পেয়েছে, তার জন্য সমগ্র জাতি বঙ্গবন্ধুর প্রতি চিরকৃতজ্ঞ- চিরঋণী, বলে তিনি উল্লেখ করেন। এ প্রসঙ্গে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের অভূতপূর্ব সাফল্যের নানা দিক তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সংকল্প সমগ্র দেশবাসিকে উজ্জীবিত ও দেশের উন্নয়নে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করার অনুপ্রাণিত করেছে ৷
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর উপর নির্মিত দুইটি বিশেষ প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।