আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন অবশেষে সরকার ও নিজ দলে নজিরবিহীন চাপে পড়ে দলীয় প্রধানের পদ ছাড়তে বাধ্য হলেন।
এ পরিস্থিতিতে বরিসের উত্তরসূরি কে হবেন, তা নিয়ে এখন শুরু হয়েছে জল্পনা-কল্পনা। বিবিসি, রয়টার্স ও সিএনএনের।
গত মঙ্গলবার অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদের পদত্যাগের পর থেকে বরিসের সরকার টালমাটাল হয়ে পড়ে। প্রধানমন্ত্রী দ্রুত তাদের পদে নাদিম জাহাবি ও স্টিভ বার্কলেকে নিয়োগ দেন। বরিস জনসন সরে গেলে তার জায়গা নিতে পারেন, এমন ব্যক্তির আলোচনায় আছেন ঋষি সুনাক ও সাজিদ জাভিদও।
বরিসের পছন্দের কোনো উত্তরসূরি না থাকায় অনেক জ্যেষ্ঠ টোরি (কনজারভেটিভ) নেতা তার সরে যাওয়াকে সুযোগ হিসেবে নিতে পারেন। এর বাইরে বর্তমান মন্ত্রিসভা ও সাবেক মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্যও আলোচনায় আছেন। এদের উল্লেখযোগ্য নেতারা হলেন—
নাদিম জাহাবি: যুক্তরাজ্যের নতুন অর্থমন্ত্রী নাদিম জাহাবি। এর আগে তিনি শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। তিনি ইরাক থেকে শিশু শরণার্থী হিসেবে যুক্তরাজ্যে এসেছিলেন। ২০১০ সালে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে নির্বাচিত হওয়ার আগে জরিপ সংস্থা ইউগভ প্রতিষ্ঠা করেন।
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করেছেন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়লে তিনি টিকামন্ত্রী হিসেবে কাজ করে প্রশংসা কুড়ান। ২০১৬ সালে তিনি ব্রেক্সিট সমর্থন করেন। তৃণমূলের কাছে তিনি জনপ্রিয়।
লিজ ট্রাস: ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাসের বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে কনজারভেটিভ পার্টির তৃণমূলে। তিনি টোরিদের উদারপন্থি শাখা থেকে আসা রাজনীতিবিদ। তার সঙ্গে লৌহমানবী মার্গারেট থ্যাচারের তুলনা করা হয়। গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে পররাষ্ট্র দপ্তরের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি।
ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধের বিষয়ে ব্রিটেনের প্রতিক্রিয়ার মুখপাত্র তিনি। ব্রেক্সিট-পরবর্তী সম্পর্ক নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনার নেতৃত্বও দিচ্ছেন তিনি। লিজ ট্রাস বাণিজ্যমন্ত্রী ও ব্রেক্সিট বাস্তবায়নে ভূমিকা রেখেছেন।
সাজিদ জাভিদ: সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ (৫২) মন্ত্রিসভার অভিজ্ঞ সদস্য ছিলেন। তিনি সরকারের ছয়টি বিভাগের নেতৃত্ব দিয়েছেন। ২০১৯ সালের নেতৃত্বের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তার অবস্থান ছিল চতুর্থ।
ঋষি সুনাক: বরিসের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন সাবেক অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক (৪২)। করোনাভাইরাস মহামারিতে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্যাকেজের কারণে তিনি প্রশংসিত হয়েছেন। কিন্তু মানুষের জীবনযাত্রায় পর্যাপ্ত সহযোগিতা না করার কারণে এবং ধনাঢ্য স্ত্রীর কর নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন। বরিসের সঙ্গে তিনিও কোভিড লকডাউন বিধিভঙ্গ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
পেনি মরডাউন্ট: বর্তমান মন্ত্রিসভার বাইরের কেউ যদি প্রধানমন্ত্রীর পদে আসতে পারেন, তবে তিনি পেনি মরডাউন্ট (৪৯)। টোরি দলে তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। পরবর্তী টোরি নেতৃত্বের সাম্প্রতিক জরিপে তিনি ওয়ালেসের চেয়ে সামান্য পিছিয়ে।
জেরেমি হান্ট: ৫৫ বছর বয়সি সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ২০১৯ সালে নেতৃত্বের লড়াইয়ে বরিসের পরই ছিলেন। গত দুই বছরে হান্ট সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে নিজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েছেন।
এ ছাড়া পার্লামেন্টের পররাষ্ট্রবিষয়ক সিলেক্ট কমিটির চেয়ারম্যান টম টুগেনধাত (৪৯), স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল প্রমুখ নেতৃত্বের দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন।