মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম :
শুক্রবার। দুপুর ১২টা বাজার সাথে সাথেই নগরীর মসজিদগুলোর মাইকে সচরাচর পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, গজল বা ওয়াজের শব্দ শুনা যেতো সেখানে আজকে ছিলো ব্যতিক্রম। অন্যান্য শুক্রবারের মতো সেরকম কোন আনুষ্টানিকতা ছাড়াই নগরীর প্রায় সবগুলো মসজিদে জুম্মার নামায আদায় করেন সংশ্লিষ্ট মসজিদগুলোর ইমাম মুয়াজ্জিন ও খাদেমগণ। বিশ্বব্যাপী ভয়ংকর করোনা ভাইরাসের প্রভাবে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে মসজিদগুলোতে জামাআত সীমিত করা হয়। নির্দেশ মতে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাযে সর্বোচ্চ পাঁচজন ও শুক্রবারের জুম্মার নামাযে দশজন মুসল্লী অংশ নিতে পারবেন। সরকারি নির্দেশনা মেনে ধর্মপ্রাণ মুসল্লীরা এই শুক্রবারে জুম্মার নামাযের পরিবর্তে নিজ নিজ ঘরে যোহরের নামায আদায় করেন।
ঠিক একই অবস্থা হযরত শাহজালাল (র:) এর দরগাহ মসজিদে। ছিলোনা মুসল্লীদের অবাধ বিচরণ। থেমে গেছে ঝাঁকে ঝাঁকে জালালী কবুতরের বাক বাকুম কলরব। থালা হাতে মাজার প্রাঙ্গণে দেখা মিলছেনা কোনো ভিক্ষুকেরও।নেই মুসল্লিদের সারিবদ্ধ লাইন। আজ শুক্রবার এমনই দৃশ্য চোখে মাজার এলাকা ঘুরে এসে।
এই অবস্থা শুধু সিলেট মাজার এলাকার নয়, অফিস পাড়ার অবস্থাও একই। ভিড় নেই আদালত চত্বরে। দোকান-পাট খোলা নেই অধিকাংশ। মার্কেট, বিপনীবিতান ও শপিংমল গুলোতে ভিড় কমে গেছে। সবকিছু মিলিয়ে এক আতঙ্কিত পরিবেশ বিরাজ করছে শহরে।
করোনাভাইরাস নামক ঘাতক ব্যাধি রোধে সচেতনতার অংশ হিসেবে শহরজোড়ে এই নীরবতা। সিলেট অঞ্চল প্রবাসী অধ্যুষিত হওয়ায় করোনাভাইরাসের ঝুঁকি বেশি উল্লেখ করে সবাইকে সচেতন থাকার পরামর্শ প্রদান করেন বিশেষজ্ঞরা। এর পর থেকেই সিলেটে সিসিক, দোকানমালিক সমিতি সিলেটের জনসমাগম কমানোর লক্ষ্যে দোকান-পাট বন্ধের নির্দেশ প্রদান করেন।
সারা বিশ্ব থমকে গেছে,বন্ধ হয়ে গেছে অর্থনীতির চাকা। দোকানপাট,ব্যাবসা বানিজ্য নেই, ঘুরছেনা আর শিল্প-কলকারখানা ও গাড়ীর চাকা। করোনা নামক এই প্রানঘাতি ভাইরাসের সংক্রমণের কারনে সারা বিশ্ব আজ স্তব্ধ । এর ছোবল পড়েছে বাংলাদেশেও। এই ভাইরাসের প্রার্দুভাব বাড়ছে ঝুঁকির আশংকা। পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার হার্ডলাইনে।
সব ধরনের জনসমাগম বন্ধ রাখার জন্য গণপরিবহন,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এমন বাস্তবতায় ঘর বন্দী এখন মানুষ, সর্বস্তরের কর্মজীবী মানুষ এখন কর্মহীন হয়ে পড়েছে। ভাইরাসের বিস্তার রোধে সরকার প্রথমে ২৬মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করলেও পরে তা বাড়িয়ে ১৪এপ্রিল পর্যন্ত করায় কর্মস্থলে ফিরতে পারছেন না অনেকেই।