আট সন্তানের জন্ম দিয়েছেন মাত্র ১৮ মাসে! নিজেই সে কথা জানতেন না ৬৫ বছরের লীলাদেবী। সরকারি নথি দেখে আবিষ্কার করলেন এই তথ্য। আর তাতেই হইচই শুরু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের বিহার রাজ্যে। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
খবরে বলা হয়, ভারতে দরিদ্র পরিবারের গর্ভবতী মহিলাদের জন্য সেদেশে ন্যাশনাল মেটারনিটি বেনিফিট প্রকল্প চালু রয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় সন্তান প্রসবের আগে ও পরে কয়েক মাস মায়েদের ১ হাজার ৪ শত টাকা করে দেওয়া হয়।
আনন্দবাজার জানায়, গত দু’বছরে বিহারে এই প্রকল্পের আওতায় যারা টাকা পেয়েছেন, সম্প্রতি তাদের একটি তালিকা সামনে আসে। সে তালিকায় দেখা যায়, মুজফফরপুর জেলার মুসাহরি ব্লকের ছোটি কোঠিয়া গ্রামের বাসিন্দা লীলাদেবীর নামও রয়েছে। তালিকার তথ্যানুযায়ী গত ১৮ মাসে তিনি ৮ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। সে বাবদ নিয়মিত টাকাও তুলেছেন এই নারী।
তবে ভারতীয় গণমাধ্যমকে লীলাদেবী জানান, ২১ বছর আগে শেষ বার এক পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন তিনি। তার স্বামী পেশায় কৃষক। কোনো রকমে টেনেটুনে সংসার চলে তাদের। সম্প্রতি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে লেনদেনের হিসেব বার করতে গিয়ে দেখেন, এক সপ্তাহ আগে তার অ্যাকাউন্টে টাকা জমা পড়ে। কিন্তু তার নাম করে সেই টাকা আবার তুলেও নেওয়া হয়।
মুসাহরির যে স্টেট ব্যাঙ্কের শাখায় অ্যাকাউন্ট রয়েছে, তাদের কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্ট (সিএসপি) সেন্টারে বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করেন লীলাদেবী। কিন্তু সেখান থেকে জানানো হয়, খামোখা জলঘোলা না করতে। তার নামে যত টাকা তোলা হয়েছে, তা ফিরিয়ে দেওয়া হবে বলেও আশ্বস্ত করা হয় তাকে।
ওই ব্যাঙ্কের ম্যানেজার চন্দ্রশেখর সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করলে, এ ব্যাপারে কিছু জানা নেই বলে দাবি করেন তিনি। যুক্তি দেন, ফিঙ্গার প্রিন্ট প্রযুক্তি এবং আধার আইডেন্টিটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমস্ত লেনদেন হয়। তার পরেও ওই সিএসপি অপারেটর কী করে এই কাণ্ড ঘটালেন জানি না।
তবে লীলাদেবী একা নন, ৬৬ বছর বয়সী শান্তিদেবী, ৫৯ বছরের সাবিনা খাতুনসহ বিহারের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেক মহিলাই একই অভিযোগ করেছেন। এর পিছনে বড় ধরনের দুর্নীতি চক্র কাজ করছে বলে মনে করা হচ্ছে।