বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

Sex Cams

বই-খাতা নেই, ঘরও নেই—অস্থায়ী তাঁবুতেই গড়ছে গাজার আগামী




দুই বছরের যুদ্ধের কারণে দীর্ঘ সময় শিক্ষাবিচ্ছিন্ন থাকার পর গাজা উপত্যকার কিছু শিশু আবারও পড়াশোনায় ফিরতে শুরু করেছে। আংশিকভাবে ধ্বংসপ্রাপ্ত স্কুল ভবন, তাঁবু বা অস্থায়ী শিক্ষাকেন্দ্রে চলছে তাদের নতুন শিক্ষাজীবন।

এক মাস ধরে কার্যকর থাকা ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতির পর জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) এবং গাজার শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরাইলি সামরিক নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা এলাকাগুলোতে ধীরে ধীরে স্কুল খুলে দেয়া হচ্ছে।
জাতিসংঘের মূল্যায়ন অনুযায়ী, গাজার ৯৭ শতাংশ স্কুল কোনো না কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত, যার বেশিরভাগই “সরাসরি আঘাত” পেয়েছে এবং সম্পূর্ণ পুনর্গঠন বা বড় ধরনের সংস্কারের প্রয়োজন। ইসরাইলি হামলায় অনেক ফিলিস্তিনি স্কুলে আশ্রয় নেওয়া অবস্থায় নিহত হয়েছে। ইসরাইলের দাবি—হামাস যোদ্ধারা এসব ভবনে অবস্থান নিত।

স্কুলগুলো বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবেও ব্যবহৃত হচ্ছে। এ কারণে ইউএনআরডব্লিউএ নতুন “অস্থায়ী শিক্ষার স্থান” চালু করেছে। সংস্থার প্রধান ফিলিপ লাজারিনি জানিয়েছেন, ২৫,০০০ শিশু এ ধরনের স্থানে পড়াশোনা শুরু করেছে, এবং প্রায় ৩ লাখ শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসে যুক্ত হচ্ছে।

তবে গাজার শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, স্ট্রিপজুড়ে ৭ লাখ ৫৮ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে, অর্থাৎ অধিকাংশই এখনো আনুষ্ঠানিক পড়াশোনায় ফিরতে পারেনি।

ক্ষুদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য বাস্তবতা আরও কঠিন। এক ছাত্র বলেন, “আমার কাছে বই, নোটবুক, কলম বা ব্যাগ কিছুই নেই। নেই চেয়ার, বিদ্যুৎ, পানি—এমনকি যাওয়ার মতো রাস্তাও নেই।”

শ্রেণীকক্ষে যাওয়ার আগেই তাদের মোকাবিলা করতে হচ্ছে আরও মৌলিক সংগ্রাম।

আরেক শিশুর বর্ণনায়—“প্রতিদিন সকালে আমাকে পানি সংগ্রহ করতে হয়, রুটির জন্য লাইনে দাঁড়াতে হয়। আমাদের পরিবার ১০ বার বাস্তুচ্যুত হয়েছে, আমাদের আর কোনো বাড়ি নেই।”

ধ্বংসস্তূপের মাঝেও শিক্ষা ফিরে পাওয়ার এই প্রচেষ্টা গাজার শিশুদের দৃঢ়তা ও মানবিক সংকটের গভীরতাকে নতুন করে সামনে আনছে।

সূত্র: হুরিয়াত ডেইলি

সম্পাদক: শাহ সুহেল আহমদ
প্যারিস ফ্রান্স থেকে প্রচারিত

সার্চ/খুঁজুন: