এক মাসের ব্যবধানে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে সিলেটে আবারও বন্যা দেখা দিয়েছে। জেলা সদর, কোম্পানিগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ফলে বিপুল সংখ্যক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
গত ১৫ মে থেকে ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে জেলার কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি ছিলেন। সেই সময়ে নগরীতেও বিপুল সংখ্যক মানুষ বন্যা কবলিত হয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছিলেন। সেই দুর্ভোগের রেশ কাটতে না কাটতে নতুন করে বন্যার কবলে পড়েছেন মানুষ। গোয়াইনঘাট উপজেলায় বন্যা কবলিত মানুষের জন্য ৪২টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
এদিকে, সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর দুটি পয়েন্টে পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমা নদীর তীরবর্তী নগরীর বিভিন্ন এলাকার বাসাবাড়ি ও দোকানপাটে ইতিমধ্যে পানি প্রবেশ করেছে। নগরীর পাইকারি বাজার হিসেবে পরিচিত কালিঘাট ও মহাপট্টিতে নদী তীরবর্তী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আবারো পানি ঢুকেছে। এক মাস আগের বন্যার ক্ষয়ক্ষতি সামাল দেওয়ার আগে আরেক দফা বন্যায় হতাশা প্রকাশ করেছেন কালিঘাটের ব্যবসায়ী নিলাঞ্জন দাস টুকু।
সিলেটে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার সকাল ৯টায় সুরমা নদী কানাইঘাট পয়েন্টে দশমিক ৫৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। একই সময়ে কুশিয়ারা নদী ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে দশমিক ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া সারিঘাটে সারি নদী বিপদসীমার দশমিক ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
গোয়াইনঘাট উপজেলা সদরের সঙ্গে সবকটি ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। নিম্নাঞ্চলের ৯০ শতাংশ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। এই উপজেলার সদর, পূর্ব ও পশ্চিম জাফলং, মধ্য জাফলং, পূর্ব ও পশ্চিম আলীর গাও, রুস্তমপুর, তোয়াকুল, লেংগুড়াসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিলুর রহমান জানান, এক মাসের মধ্যে দ্বিতীয় দফা বন্যায় বিপুল সংখ্যক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
তিনি বলেন, বন্যা কবলিত এলাকায় ৪২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে পানিবন্দি মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে আনার কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে কানাইঘাট উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ও পশ্চিম, চতুল, সদর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। মঙ্গলবার রাত থেকে কানাইঘাট পৌর শহরের পূর্ব বাজারে পানি প্রবেশ করায় অনেক দোকানপাট তলিয়ে গেছে। সীমান্তবর্তী আরেক উপজেলা জকিগঞ্জের নিম্নাঞ্চলের গ্রামগুলোতে শত শত মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
সীমান্তবর্তী কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হওয়া পাশাপাশি রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকান্ত চক্রবর্তী জানান, উপজেলা সদরের রাস্তায় পানি উঠেছে।