ডেস্ক রিপোর্টঃ
এবার পবিত্র হজের খুতবা বাংলা ভাষায়ও প্রচারিত হবে। হিজরি বর্ষের ৯ তারিখে আরাফাতের ময়দানে হজের খুতবা অনুষ্ঠিত হয়। সাধারণত আরবি ভাষায়ই এ খুতবা দেওয়া হয়ে থাকে। তবে গত বছর খুতবা প্রচারিত হয়েছিল পাঁচটি ভাষায়, এবার প্রচারিত হবে ১০টি ভাষায়। আর এবার ১০ ভাষার মধ্যে যুক্ত হয়েছে বাংলাও।
দুবাইভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ জানায়, এ বছর ১০টি ভাষায় খুতবা প্রচারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গ্র্যান্ড মসজিদ ও মসজিদে নববীর জেনারেল অ্যাফেয়ার্সের চেয়ারম্যান ড. আবদুল রহমান বিন আবদুল আজিজ আল সুদাইস। তিনি জানিয়েছেন, এবার আরবি ভাষা ছাড়াও হজের খুতবা ইংরেজি, মালয়, উর্দু, ফার্সি, ফরাসি, মান্দারিন, তুর্কি, রুশ, হাবশি ও বাংলা ভাষায় প্রচারিত হবে।
মহামারি নভেল করোনাভাইরাসের কারণে এ বছর সীমিত আকারে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে পবিত্র হজ। ‘লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে ফের মুখর হবে পবিত্র মক্কা নগরী। সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে এবারের হজে অংশ নেওয়া হজযাত্রীরা সাত দিনের হোম কোয়ারেন্টিন শেষ করে মক্কায় আসতে শুরু করেছেন। গতকাল শুক্রবার বিকেলে দেশটির আল কাসিম প্রদেশ থেকে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ ও প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করে হজযাত্রীদের একটি দল জেদ্দা কিং আবদুল আজিজ বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। বিমানবন্দরে দেশটির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাঁদের স্বাগত জানান। এ সময় হজযাত্রীদের কবুল হজ নসিবসহ তাঁদের সুস্থতার জন্য দোয়া করা হয়। দোয়ায় গুনাহ থেকে মুক্তির পাশাপাশি করোনাভাইরাস থেকে বিশ্ববাসীর মুক্তি কামনা করা হয়।
এদিকে সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহবিষয়ক মন্ত্রী মুহাম্মদ সালেহ বিন তাহের বেনতেন আল নিউজ চ্যানেলে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, হজযাত্রীদের নিরাপত্তায় সরকার সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে। আজ শনিবারের মধ্যে সৌদি আরবের অন্যান্য প্রদেশের হজযাত্রীরা মক্কায় এসে পৌঁছাবেন। তাঁরা গত রোববার থেকে হোম কোয়ারেন্টিন শুরু করেন। হজ পালনের জন্য মক্কায় প্রবেশের প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাঁরা নির্দিষ্ট হোটেলে (জমজম টাওয়ার) আরো চার দিনের কোয়ারেন্টিন পালন করবেন। এরপর ৮ জিলহজ বাদ ফজর রওনা হবেন মিনায়। মিনাযাত্রার মধ্য দিয়ে শুরু হয় হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা। ১২ জিলহজ পর্যন্ত, মিনা, মুজদালিফা, আরাফাতের ময়দান ও মক্কায় হজের বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে হয়।
সৌদি আরবে বসবাসকারী বিভিন্ন দেশের অধিবাসী ও দেশটির নাগরিকদের সমন্বয়ে এবার ১০ হাজার মানুষ হজ পালন করবেন। সীমিত মানুষের অংশগ্রহণে হজ অনুষ্ঠিত হলেও সার্বিক প্রস্তুতিতে কোনো ঘাটতি নেই সৌদি কর্তৃপক্ষের। মাশায়েরে মোকাদ্দাসায় (হজের বিধিবিধান পালনের বিশেষ স্থানগুলো) প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সেসব স্থান হজযাত্রীদের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে হাজিদের চলাচলের এলাকাগুলো।
মসজিদে হারামেও বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে। হজের সময় সাড়ে তিন হাজার সদস্যের বিশাল একটি দল থাকবে মসজিদে হারামের তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে। মসজিদে হারাম পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, মসজিদের হারামের সার্বিক যান্ত্রিক ত্রুটি দেখাশোনা করা এবং অপবিত্রতা থেকে রক্ষার জন্য এই দল গঠন করা হয়েছে। তারা ২৪ ঘণ্টা মসজিদে হারামে কর্মরত থাকবেন।
আগামী ৩০ জুলাই বৃহস্পতিবার পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে।