অনুক্ত কামরুল:
প্রবাসী সোহেল রানা হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচি করেছেন বাংলাদেশিরা। রোববার (৫ জুন) রাজধানী প্যারিসে ‘জাস্টিজ পুখ’ ‘সোহেল হত্যার বিচার চাই’ স্লোগানে প্রতিবাদ করেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশ কমিউনিটির আয়োজনে মিছিলটি মার্চ প্লাস দ্য বাস্তিল থেকে শুরু হয়ে রিপাবলিক চত্বরে শেষ হয়।
সোহেল রানা যেখানে হামলার শিকার হন সেই জায়গায় ‘প্লাস দ্য বাস্তিল’ দুপুর থেকেই জড়ো হতে থাকেন বাংলাদেশিরা। প্যারিসে এ পর্যন্ত বাংলাদেশিদের উদ্যোগে হওয়া কোনো ঘটনায় এটাই সবচেয়ে বড় মিছিল। এসময় বিভিন্ন দেশের অভিবাসীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে হত্যার প্রতিবাদে সামিল হন।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া বাংলাদেশি হাফিজুর রহমান বলেন, এ প্রতিবাদে আমিসহ আরও অনেকেই নিজ দায়িত্বে এসেছি। কয়েকদিন ধরেই আসছি কারণ, আমরা যদি আজ প্রতিবাদ না করি তাহলে এমন ঘটনা কাল আমার বেলায়ও ঘটতে পারে। আগামীতে যেন কোনো বাংলাদেশির ওপর হামলার ঘটনা না ঘটে সেটি নিশ্চিত করতে হবে প্রশাসনকে সোহেলের হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে।
আয়োজকদের অন্যতম রাব্বানী খান জানান, নিহত সোহেল রানা হত্যার বিচার চাই। ইদানীং প্রবাসী বাংলাদেশিরা বিভিন্নভাবে আক্রমণের শিকার হচ্ছে। এদেশের সরকারের কাছে এখন একটায় দাবি সোহেল রানা হত্যার বিচার চাই ও তার পরিবারকে যেন বৈধতা দেওয়া হয়।
আয়োজকদের অন্যতম উবায়দুল্লাহ কয়েস জানান, সোহেল একজন সহজ-সরল মানুষ ছিলেন। কারও সঙ্গে তার বিরোধ থাকার কথা না। আফ্রিকানরা সন্ত্রাসীরা উদ্দেশ্যেই হামলা করেছে বলে আমাদের ধারণা। এ ঘটনায় রেস্টুরেন্টের মালিক বাদী হয়ে মামলা করেছেন।
বাংলাদেশিরা জানান, সোহলে রানা প্যারিসের ঐতিহাসিক স্থাপনা বাসতিলের একটি রেস্টুরেন্টে রাতে কাজ করতেন। কাজ শেষে শনিবার ভোর ৫টার দিকে বাড়ি ফেরার উদ্দেশে বের হন। এ সময় রেস্টুরেন্টের সামনে সন্ত্রাসীরা তার ওপর হামলা করে। মাথায় আঘাত পেয়ে জ্ঞান হারান। পরে পুলিশ তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে। ভর্তির পর থেকে তার আর জ্ঞান ফেরেনি।
প্যারিসে বাংলাদেশ দূতাবাসের দ্বিতীয় সেক্রেটারি মো. ওয়ালিদ বিন কাশেম বলেন, সোহেল রানার হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও শাস্তির জন্য বাংলাদেশ দূতাবাস গুরুত্ব সহকারে কাজ করছে।
কাজ থেকে রাতে বাসায় ফেরার পথে গত ২১ মে দুর্বৃত্তের হামলায় গুরুতর আহত হন সোহেল রানা। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৫ মে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। সোহেল রানা মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদীখান উপজেলার লতব্দী ইউনিয়নের খিদিরপুর গ্রামের মো. আজিজুল হকের ছেলে।
সোহেলের স্ত্রী ও তিন বছরের একটি ছেলে রয়েছে।
সোহেল রানার মৃত্যুতে ফ্রান্স প্রবাসীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বাংলাদেশিরা তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন। এছাড়াও প্রবাসী বাংলাদেশিরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হ্যাশ ট্যাগের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। তারা ফেসবুকে পুলিশ প্রসাশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে #JusticePourSohelRana, এবং #PréfecturedePolice লিখে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।