ডি ডব্লিউ:
বার্লিনের স্কুলে মুসলিম শিক্ষিকাদের হিজাব পরতে দিতে হবে। রায় দিল জার্মানির আদালত। এক নারীর আবেদনের ভিত্তিতে কয়েক বছর ধরে একটি মামলা চলছিল। বৃহস্পতিবার তার ফয়সলা হলো। এত দিন পর্যন্ত মুসলিম শিক্ষিকারা স্কুলে হিজাব পরে যেতে পারতেন না।
নিট্রালিটি বা নিরপেক্ষতার আইন রয়েছে জার্মানিতে। যার অর্থ, স্কুলে বা কোনও সরকারি প্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় চিহ্ন ব্যবহারকারী কোনও পোশাক পরা যাবে না। সে কারণেই স্কুলে হিজাব বা স্কার্ফ পরে যেতে পারতেন না মুসলিম শিক্ষিকারা। বার্লিনে বসবাসকারী এক মুসলিম নারী এই নিয়মের বিরুদ্ধে বার্লিন আদালতে একটি মামলা করেন। দীর্ঘদিন সেই শুনানি চলার পরে ২০১৮ সালে বার্লিনের নিম্ন আদালত ওই নারীর পক্ষে রায় দেন। বলা হয়, হিজাব পরে স্কুলে যেতে পারবেন মুসলিম নারীরা। একই সঙ্গে ওই নারীকে পাঁচ হাজার ১৫৯ ইউরো ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু সরকারপক্ষের উকিল এরপর উচ্চ আদলাতে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন। বৃহস্পতিবার উচ্চ আদালত তার রায় জানিয়েছে।
সেখানে বলা হয়েছে, হিজাব পরে কোনও মুসলিম নারী যদি স্কুলে যান এবং তাতে যদি শান্তি ভঙ্গ না হয়, তা হলে এতে কোনও অন্যায় নেই। হিজাব পরা এক ধরনের অধিকার। তা থেকে কাউকে বঞ্চিত করা যায় না। ফলে মুসলিম শিক্ষিকারা চাইলে স্কুলে হিজাব পরে যেতে পারেন। নিম্ন আদালতের রায়ের সঙ্গে কোনও অংশেই দ্বিমত পোষণ করেনি উচ্চ আদালত।
বার্লিনে বসবাসকারী মুসলিম নারীদের বক্তব্য, এটি তাঁদের বড় জয়। বস্তুত, স্কুলে হিজাব পরা নিয়ে কিছু দিন আগে জার্মানির আরও কয়েকটি রাজ্যে গোলযোগ দেখা গিয়েছিল। বেশ কিছু রাজ্য স্কুলে হিজাব, বোরখা পরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। তখনও ধর্মীয় অধিকার এবং স্বাধীনতার প্রশ্ন উঠেছিল। বার্লিন আদালতের রায় এ বার দেশের অন্য আদালতগুলিকেও প্রভাবিত করবে বলে অনেকে মনে করছেন। তবে জার্মান বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, জার্মানির নিউট্রালিটি বা নিরপেক্ষতার আইন খুব শক্তিশালী। বার্লিন আদালতের রায় এবং নিরপেক্ষতার আইনের মধ্যে কী ভাবে সামঞ্জস্য রক্ষা করা হবে, তা নিয়ে অনেকেই ভাবিত। নিরপেক্ষতার আইনে বদল আসতে পারে বলেও কেউ কেউ মনে করছেন।