কবির আল মাহমুদ, স্পেন:
দৈনিক প্রথম আলোর জ্যৈষ্ঠ সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে তার পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দ্বারা নির্যাতন এবং আইনের অপপ্রয়োগ করে মামলা দায়ের করে কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদে নির্যাতন, গ্রেপ্তার ও মুক্তির প্রতিবাদে বিশ্ব সাংবাদিক ফোরাম ও নাগরিক সমাজের প্রতিবাদ সমাবেশ আয়োজন করে।
গতকাল বাংলাদেশ সময় রাত দশটায় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা লেখক, সাংবাদিক সাংস্কৃতিক ও সামাজিক ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে প্রবাসী সাংবাদিক বাকি উল্লাহ রিপন ও সুলতানা খানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে জার্মান বাংলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি খান লিটন এবং পর্তুগালের প্রবাসী সাংবাদিক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী যৌথ সঞ্চালনায় অনলাইনে এই প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের সুপরিচিত জনপ্রিয় প্রখ্যাত নাট্য ব্যক্তিত্ব ও গায়ক ফজলুর রহমান বাবু। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, রোজিনা ইসলাম অনুসন্ধানীমূলক সংবাদ সংগ্রহের জন্য গিয়েছিলেন কিন্তু তাকে আটকে রেখে হেনস্থা করে এবং পরবর্তীতে পুলিশে সোপর্দ করে যে ব্যবহার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীরা করেছেন তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এর সাথে দুর্নীতির একটি জোকসাজোস রয়েছে অর্থাৎ তিনি ইতিপূর্বে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন লেখালেখি করেছেন সেই কারণে তাকে আজকে এই পরিণতি সম্মুখীন হতে হয়েছে। সরকারকে বিষয়টি নজরে নিতে হবে। কারণ সাংবাদিকরা সরকারের প্রতিপক্ষ নয়।
জুম মিটিংয়ে আয়োজিত এই প্রতিবাদ সভায় লন্ডন থেকে যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন সাংবাদিক সারোয়ার আলম, ৫২ টিভির নিউজ ডিরেক্টর এম এ জামান, মস্কো থেকে সৌরব এলাহী, মালয়শিয়া থেকে আহমেদুল কবির ও মো মনিরুজ্জান, তুরস্ক থেকে সারোয়ার জান, জার্মানি থেকে হাবিব বাবুল ও হাবিবুল্লাহ আল বাহার, গ্রীক থেকে প্রদিপ কুমার সরকার ও কানাডা থেকে উজ্জ্বল দাস, দক্ষিন কোরিয়া থেকে অসীম বিকাশ বড়ুয়া , অস্ট্রেলিয়া থেকে নির্ঝর মজুমদার, ফ্রান্স থেকে ফেরদৌস করিম আকঞ্জী, লুৎফর রহমান বাবু, ও শাহ সুহেল আহমদ , ইতালি থেকে আখি সীমা কাউসার, জমির হোসেন, শাহিন খালিদ কাউসার, সোহেল মজুমদার শিপন, আলামিন হোসেন , স্পেন থেকে মিরন নাজমুল ও কবির আল মাহমুদ, অস্ট্রিয়া থেকে হাসান তানিম, সুইজারল্যান্ড থেকে রহমান খলিলুর, কাজী আসাদুজ্জামান ও অরুণ সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রায় ৩৫ জন লেখক, কলামিষ্ট, সাংবাদিক ও প্রবাসীরা।
সভায় বক্তারা বলেন, সংবাদ সংগ্রহ কোন অপরাধ নয় বরং সংবাদ সংগ্রহে অপরাধীদের সমস্যা সৃষ্টি হয় সুতরাং অপরাধী কে দোষী সাব্যস্ত না করে সংবাদকর্মীকে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো সংবাদমাধ্যম এবং রাষ্ট্রের জন্য খুবই গুরুতর অশনি সংকেত। রোজিনা ইসলাম কোনো অপরাধ করেননি তিনি সংবাদ সংগ্রহের সচিবালয়ে গিয়েছিলেন তাই তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ তুলে নিয়ে তাকে নিঃশর্ত মুক্তি প্রদান করার দাবি জানান।
এছাড়া উপস্থিত প্রবাসী সাংবাদিক গণ বাংলাদেশ সরকারকে সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম কে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দিয়ে এর সাথে জড়িত ব্যক্তিদের কে আইনের আওতায় নিয়ে যথাযথ শাস্তি প্রদান করে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সাংবাদিকদের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
অনুষ্ঠানের তত্তাবধায়ক সাংবাদিক বাকি উল্লাহ রিপন বলেন, সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম এর মুক্তির সাথে সাথে সাংবাদিকদের সংবাদ সংগ্রহের স্বাধীনতা এবং ইতিপূর্বে যে সকল সাংবাদিক নির্যাতিত হয়েছিলেন দোষীদের খুঁজে বের করে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করতে হবে। তাহলেই বাকস্বাধীনতা এবং একটি সুন্দর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সহায়ক হবে।