ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
সারা বিশ্বের কাছে কানাডার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ অভিবাসন প্রক্রিয়ায় দেশটির স্থায়ী বসবাসের সুযোগ। চলতি বছরে ৪ লাখ এক হাজার অভিবাসীকে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ দিয়ে গত ১০০ বছরের মধ্যে নতুন রেকর্ড করল কানাডা।
আদিবাসীদের বাদ দিলে কানাডার জনসংখ্যার পুরোটাই অভিবাসীদের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে। কানাডা তাদের জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে দেশটির অর্থনীতির চালিকা শক্তি হিসেবে মনে করে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ক্ষমতায় আসার পর থেকে অভিবাসন সুবিধা অনেক বেড়েছে। কানাডার অভিবাসন মন্ত্রীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে- যারা নতুন করে দেশটিতে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ পেয়েছেন, তাদের একটি বড় অংশ কানাডায় অস্থায়ীভাবে বসবাস করছিলেন।
কানাডায় অভিবাসীদের স্থায়ী বসবাসের সুযোগ দান আগামী বছরেও চলবে। গত বছরের (২০২০ সালের) অক্টোবরে ২০২১-২০২৩ সালের অভিবাসন লক্ষ্যমাত্রা কানাডার সংসদে অনুমোদিত হয়েছে। আগামী বছরে (২০২২ সালে) ৪ লাখ ২১ হাজার অভিবাসীকে দেশটিতে বসবাসের সুযোগ দিতে চায় কানাডা সরকার।
এ প্রসঙ্গে অভিবাসনমন্ত্রী সিন ফ্রাসার জানিয়েছেন, গত বছর আমরা একটি উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি। আজ আমরা এটি অর্জন করেছি। এটি আমাদের দেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত, কারণ আমরা আমাদের ইতিহাসে এক বছরে সর্বোচ্চসংখ্যক নতুনদের স্বাগত জানাতে পেরেছি।
কানাডার বাংলা পত্রিকা ‘নতুনদেশ’-এর প্রধান সম্পাদক শওগাত আলী সাগর বলেন, কোভিডে কানাডাসহ বিভিন্ন দেশের সীমান্ত বন্ধ, ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞাসহ উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কানাডায় ইমিগ্র্যান্টের সংখ্যা কমে গিয়েছিল। লক্ষ্যমাত্রা পূরণই কঠিন হয়ে যায়। ফলে সরকার বিশেষ পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়। গত মে মাসে বিদেশি শিক্ষার্থী, ওয়ার্ক পারমিট এবং অন্যান্য উপায়ে কানাডায় অস্থায়ীভাবে বসবাসরতদের মধ্য থেকে ৯০ হাজার জনকে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ দেওয়া হয়।
ক্যালগেরির রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী রূপক দত্ত বলেন, বন্ধুপ্রতিম কানাডা সরকার অভিবাসন নীতি অত্যন্ত সফলভাবে পরিচালনা করছে, তাই আমরা আশা করি প্রচুরসংখ্যক বাংলাদেশি কানাডায় এসে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিরাট ভূমিকা পালন করুক।
বিশিষ্ট কলামিস্ট উন্নয়ন গবেষক ও সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষক মো. মাহমুদ হাসান বলেন, পুঁজিবাদী অর্থনীতির দেশ হয়েও কানাডা একটি অত্যন্ত টেকসই শক্তিশালী সাম্যভিত্তিক সমাজব্যবস্থা গড়তে সক্ষম হয়েছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তাসহ সকল মৌলিক মানবাধিকারের প্রশ্নে এদেশে কোন ভিআইপি, ভিভিআইপি সংস্কৃতি গড়ে উঠেনি। তাই অভিবাসন প্রত্যাশীদের পছন্দের তালিকায় কানাডা এখনো সবার শীর্ষে।
এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, কানাডার বিচার ব্যবস্থা, নির্বাচনী প্রক্রিয়া, শিক্ষা ব্যবস্থা, চিকিৎসা, যোগাযোগ ব্যবস্থা, জীবনের নিরাপত্তা, স্থিতিশীল অর্থনীতি, শক্তিশালী ব্যাংকিং ব্যবস্থার কারণে দেশ হিসেবে বিশ্বের সবার কাছে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে কানাডা।