করোনা ভাইরাস মহামারীর কারণে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ বাহারাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই, আবুধাবী ও কাতার থেকে চাকরি হারিয়ে খালি হাতে দেশে ফিরছে প্রবাসী কর্মীরা। চড়া সুদে ঋণ ও ভিটেমাটি বিক্রি করে পরিবারে ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে বিদেশে গিয়ে এসব কর্মীদের অনেকেই অভিবাসন ব্যয়ের টাকাও তুলতে পারেনি।
অনেক প্রবাসী কর্মী নানা অপরাধে জড়িয়ে বিদেশের কারাগারে শাস্তি ভোগ করছে। করোনার কারণে কারাগারগুলো খালি করে বন্দিদের স্ব স্ব দেশে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে বিভিন্ন দেশ।
এছাড়া বিদেশে গিয়ে অনেকেই হৃদরোগসহ নানা কারণে মারা যাচ্ছে। দীর্ঘ দিন পর এসব কর্মীদের লাশ প্রায় প্রতিদিনই দেশে আসছে। বিমানবন্দরে প্রবাসীদের লাশের কফিন দেখে অপেক্ষমান স্বজনরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছে। ভয়াবহ অর্থনৈতিক মন্দায় দেশগুলোর অভিবাসী কর্মীদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। এসব দেশগুলো থেকে চাকরি হারিয়ে দেশে ফেরত আসা অব্যাহত রয়েছে।
গত বুধবার গভীর রাতে বাহরাইন থেকে বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে চাকরি হারিয়ে ৪১৩ জন বাংলাদেশি কর্মী খালি হাতে দেশে ফিরেছেন। এদের মধ্যে ৫০ জন কর্মী অসুস্থ এবং ৪০ জন জেলখাটা কর্মী ছিল। ৩৯ জনকে কোয়ারেন্টিনে দেয়া হয়েছে। বিমানবন্দর কল্যাণ ডেস্কের এডি ফখরুল আলম এ বিষয়টি জানান। গত রাতে একই ফ্লাইটে দেশটি থেকে ৮ প্রবাসী কর্মীর লাশ এসেছে। এছাড়া গত রাতে মালয়েশিয়ার মাস কার্গোর একটি বিশেষ ফ্লাইটে দেশটিতে বিভিন্ন সময়ে মৃত ২৪ জন প্রবাসী কর্মীর লাশ দেশে পৌঁছেছে। গত এক মাসে দেশটি থেকে শতাধিক প্রবাসী কর্মীর লাশ দেশে পৌঁছেছে। রাতে বিমানবন্দরে অপেক্ষমান স্বজনরা প্রবাসীদের লাশের কফিন দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এসব লাশ পরিবহন, দাফন ও কাফনের জন্য ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ তহবিল থেকে ৩৫ হাজার টাকা করে নগদ সহায়তা দেয়া হয়েছে।
বিমানবন্দরে প্রত্যাগত প্রবাসী কর্মীরা জানায় করোনা মহামারীর মধ্যে এসব দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক কোম্পানিতে কাজ না থাকায় হাজার হাজার প্রবাসী কর্মী কর্মস্থল থেকে ছাঁটাইয়ের ঝুঁকিতে পড়ছেন।