ম্যারাথন বৈঠকে ৭৫০ বিলিয়ন ইউরোর করোনাভাইরাস তহবিল গঠন চুক্তিতে সম্মত ইইউ নেতারা। অতিমহামারীতে ক্ষতিগ্রস্ত সদস্য দেশগুলোর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের জন্য এই অর্থ অনুদান এবং ঋণ হিসেবে দেবে ২৭ সদস্যের এই ব্লকটি । সেইসঙ্গে এই শীর্ষ সম্মেলনে আগামী ৭ বছরের জন্য ইইউর’র ১.৮২ ট্রিলিয়ন ইউরোর মূল বাজেটও ঘোষিত হয়। -সিএনএন, ইউরো নিউজ, আল জাজিরা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই চুক্তির ঘোষণা পোস্ট করেন ইউরোপিয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, এটি ইউরোপের জন্য এক ঐতিহাসিক দিন। বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী সোফি উইলিয়ামস বলেন, ইইউ কখনোই ভবিষ্যতের জন্য এতো বিনিয়োগ করতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে নি। যদিও সদস্য দেশগুলোর দর-কষাকষির জেরে সম্মেলন প্রায় ব্যর্থ হতে যাচ্ছিলো। লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সাত বছরের ইইউ বৈঠকের অভিজ্ঞতায় এমন দ্বিধা বিভাজনের চিত্র আর দেখেন নি।
স্বঘোষিত ‘ফ্রুগাল ফোর’-সুইডেন, ডেনমার্ক, অস্ট্রিয়া ও নেদারল্যান্ডের সঙ্গে মিলে ফিনল্যান্ড ৫০০ বিলিয়ন ইউরো অনুদান হিসেবে দিতে অস্বীকৃতি জানায়। তারা এই অর্থ ৩৭৫ বিলিয়নে নামিয়ে আনতে প্রস্তাব দেয়। অন্যদিকে স্পেন ও ইতালির মতো ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো চায় অনুদান যেনো ৪০০ বিলিয়নের কম না হোক। অন্যদিকে হাঙ্গেরি ও পোল্যান্ড বলেছে, গণতান্ত্রিক নীতি বর্জনের শাস্তিমূলক পদক্ষেপ হিসেবে অনুদান বন্ধ রাখলে তারা আর্থিক কর্মসূচীর বিরুদ্ধে ভেটো দেবে।
বিতর্কের মুহুর্তে ম্যাক্রোঁ টেবিল চাপড়ে ক্ষুদ্ধ হয়ে বলেন, ‘ফ্রুগাল ফোর ইউরোপিয় প্রকল্পকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দিচ্ছে।’ পোলিশ প্রধানমন্ত্রী এই চারদেশকে ‘স্বার্থান্বেষী’ বলে আখ্যা দেন। চতুর্থ দিন মেজাজ হারিয়ে বৈঠক থেকে বেরিয়ে যান জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেল। সম্মেলন ভেস্তে যাওয়ার পথে ইইউ প্রধান মিশেল ৭৫০ বিলিয়ন ইউরোর তহবিলের মধ্যে ৩৯০ বিলিয়ন ইউরো অনুদান এবং বাকি ৩৬০ বিলিয়ন ইউরো স্বল্প সুদে অর্থ ঋণ হিসেবে বণ্টন করেন। তিনি বলেন, এতো পরিশ্রমের পর আমি সংবাদমাধ্যমে ‘ইইউর মিশন ইমপসিবল’ হেডলাইন দেখতে চাই না।