মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

Sex Cams

ফ্রান্সের মসজিদে শুকরের মাথার গ্রাফিতি




আন্তর্জাতিক ডেস্ক

উত্তর-পশ্চিম ফ্রান্সের একটি মসজিদে শুকরের মাথার গ্রাফিতি এঁকেছে দুষ্কৃতিকারিরা। দেশটিতে অবস্থানরত তুর্কি-মুসলিম গোষ্ঠী জানিয়েছে, গত সপ্তাহে মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর দ্বিতীয়বারের মতো আক্রমণ করেছে একটি দুষ্কৃতিকারি মহল।

তুরস্কের গণমাধ্যম ডেইলি সাবার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তুর্কি-ইসলামিক ইউনিয়ন অফ রিলিজিয়াস অ্যাফেয়ার্স (DITIB) পরিচালিত চেরবার্গের একটি মসজিদের দরজায় শুকরের মাথার গ্রাফিতি পাওয়া যায়। মসজিদে কারা এই গ্রাফিতি এঁকেছে তাদের এখনো চিহ্নিত করা যায়নি। তবে তারা অবশ্যই দুষ্কৃতিকারি।

এমন ঘটনা এবারই প্রথম না। গত বছর পবিত্র রমজান মাসে ফ্রান্সের একটি মসজিদের বাইরে শুকরের মাথা ফেলে রাখা হয়েছিল।

মসজিদে শুকরের মাথার গ্রাফিতি আঁকার ঘটনায় সেন্ট-ওমেরের মেয়র ফ্রাঁসোয়া নিন্দা জানিয়ে বলেন, সেন্ট-ওমেরের জনগণের পক্ষ থেকে আমি মুসলিমদের আশ্বাস দিচ্ছি আপনারা সম্পূর্ণ নিরাপদ। সেই সাথে তিনি দুষ্কৃতিকারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও আশ্বাস দেন।

অপকর্মকারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে দেশটির সরকার। শহরের মেয়র প্রত্যেক মসজিদের চারপাশে নিরাপত্তা জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এমনকি সিসি টিভিও আরও বাড়ানোর আশ্বাসও দিয়েছেন।

পশ্চিম ইউরোপের মসজিদগুলিতে, বিশেষ করে জার্মানি এবং ফ্রান্সে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভাঙচুর, হয়রানি এবং হুমকি বৃদ্ধি পেয়েছে। আগের ডানপন্থী রাজনৈতিক দল এবং আন্দোলনের প্রচারণার কারণে এমনটা ঘটেছে বলে মনে করছেন অনেকে।

ফ্রান্সের জনসংখ্যা হচ্ছে ৬ কোটি ৮০ লাখের বেশি। দেশটিতে পশ্চিম ইউরোপের সবচেয়ে বেশি মুসলিম জনসংখ্যা রয়েছে। এরপরই অবশ্য জার্মানিতে। অনুমান করা হয়, জার্মানিতে ৩০ থেকে ৫৭ লাখ মুসলিম বাস করে।

গত ডিসেম্বরে প্রকাশিত একটি নতুন প্রতিবেদন বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি হামলার ফলে ইউরোপ জুড়ে ইসলামোফোবিয়াও আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ফ্রান্সে, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের ইসরাইলে হামলার পর প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর ইসরায়েল পক্ষে বক্তব্য মুসলমানদের বিরুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিক বর্ণবাদকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

প্রতিবেদনের লেখক কাওতার নাজিব উল্লেখ করেছেন, ফ্রান্সের স্কুলে হিজাবের উপর সরকারের নিষেধাজ্ঞা মুসলিম ছাত্র এবং তাদের পরিবারের জন্য উল্লেখযোগ্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পদক্ষেপকে ফ্রান্সে মুসলিম-বিরোধী মনোভাবের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের লক্ষণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বিশেষ করে, ফিলিস্তিন-ইসরাইল সংঘাতের প্রভাব ইউরোপের মুসলমানদের ওপর সরাসরি পড়ছে। হামাসের হামলার পর ফ্রান্সসহ কিছু দেশের সরকার ও মিডিয়া একপাক্ষিক অবস্থান নিচ্ছে, যা মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করছে।

সম্পাদক: শাহ সুহেল আহমদ
প্যারিস ফ্রান্স থেকে প্রচারিত

সার্চ/খুঁজুন: