ব্যাট করতে নামার পর জেমস অ্যান্ডারসন আার বেন স্টোকসের পরপর দু’ওভারেই স্লিপে পরপর দু’বার ক্যাচ তুলে বেঁচে গিয়েছিলেন বিরাট কোহলি। এরপর স্টোকসের বলে আরও একবার স্লিপে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান তিনি। কোহলির মতো ব্যাটসম্যান যখন এভাবে তিনবার জীবন পেয়ে যান, তখন পরে কী ঘটতে পারে তা জানা কথা। তিন’ তিনবার জীবন পাওয়াটাকে বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগালেন ভারত অধিনায়ক।
তুলে নিলেন ক্যারিয়ারের ২২তম টেস্ট সেঞ্চুরি। তার দুর্দান্ত এই সেঞ্চুরিতে এজবাস্টন টেস্টে স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে বেশ ভালো একটা জবাব দিতে পেরেছে ভারত। যদিও প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডের চেয়ে এগিয়ে থাকতে পারেনি। তবে পিছিয়েও ছিল না খুব বেশি। ইংলিশদের চেয়ে মাত্র ১৩ রান দূরে থাকতে অলআউ হয়েছে ভারত।
অর্থাৎ, প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডের করা ২৮৭ রানের জবাবে ভারত অলআউট হয়েছে ২৭৪ রানে। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে বিরাট কোহলি যখন আউট হন, তখন তার নামের পাশে জ্বলজ্বল করছিল ১৪৯ রানের ঝকঝকে ইনিংস। ২২৫ বলে খেলা এই ইনিংসটিতে ছিল ২২টি বাউন্ডারির মার এবং ১টি ছক্কার মার।
শেষ উইকেট জুটিতে উমেষ যাদবকে নিয়ে ৫৭ রানের জুটি গড়েন বিরাট কোহলি। এর মধ্যে ১৬ বলে মাত্র ১ রান করেন উমেষ যাদব। তার কাজ ছিল শুধু এক পাশ আগলে দাঁড়িয়ে থাকা। উমেষ যাদব দাঁড়িয়ে থাকতে না পারলে কোহলির সেঞ্চুরিও হতো না। ১৭৪ বলে সেঞ্চুরির পর আরও ৪৯ রান যোগ করেন তিনি।
ইংল্যান্ডের মাটিতে এর আগে কখনও হাফ সেঞ্চুরিও তুলতে পারেননি বিরাট কোহলি। ৩৭ ছিল তার সর্বোচ্চ। সেই তিনিই কি না তিনবার জীবন পেয়ে তুলে নিলেন অন্যতম সেরা সেঞ্চুরি। ২১ রানের মাথায় জেমস অ্যান্ডারসনের বলে স্লিপে দাঁড়ানো ডেভিড মালান হাতের তালুতে নিয়েও ক্যাচটি ছেড়ে দেন।
পরের ওভারে বেন স্টোকসের প্রথম বলে আবারও স্লিপে ক্যাচ তুললেন হার্দিক পান্ডিয়া। এবার ক্যাচ ছাড়লেন অ্যালিস্টার কুক। জীবন পাওয়ার পর কোহলি হাফ সেঞ্চুরি তুলে ফেলেন। এরপরই বেন স্টোকসের বলে স্লিপে আবারও ক্যাচ তোলেন কোহলি। আবারও ক্যাচ ছেড়ে দেন ডেভিড মালান।
ক্যাচ ছাড়ার প্রতিযোগিতায় যখন ব্যস্ত ইংলিশরা, তখন বিরাট কোহলি তুলে নিলেন ক্যারিয়ারের ২২তম সেঞ্চুরি। ১১৩তম টেস্টে এসে ২২তম সেঞ্চুরির দেখা পেলেন তিনি। তারই পূর্বসুরি শচীন টেন্ডুলকারের লেগেছিল ১১৪ টেস্ট। স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের লেগেছিল মাত্র ৫৮ টেস্ট। ১০১ টেস্ট খেলে ২২তম সেঞ্চুরি তুলে নেন সুনিল গাভাস্কার। স্টিভেন স্মিথের লেগেছে ১০৮ টেস্ট। পাকিস্তানের মোহাম্মদ ইউসুফের লেগেছে ১২১ টেস্ট।
কোহলি সেঞ্চুরি করলেও ভারতের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান ছিল মাত্র ২৬, শিখর ধাওয়ানের। ২২ রান করেন হার্দিক পান্ডিয়া এবং ২০ রান করেন মুরালি বিজয়। ইংল্যান্ডের স্যাম কুরান নেন সর্বোচ্চ ৪ উইকেট। ২টি করে উইকেট নেন জেমস অ্যান্ডারসন, আদিল রশিদ এবং বেন স্টোকস।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে অবশ্য বিপর্যয়ে ইংল্যান্ড। দলীয় মাত্র ৯ রানে হারিয়েছে ওপেনার অ্যালিস্টার কুকের উইকেট। আউট হওয়ার সময় রানের খাতাই খুলতে পারেননি তিনি।