ঢাকা প্রতিনিধিঃ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) কর্তৃক ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রতিবাদে ১০ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়া।
মানববন্ধনে তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সভাপতি আখতার হোসাইন জাহেদ বলেন, ডাকসু কর্তৃক ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত গ্রহণ অসাংবিধানিক, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ডাকসু গঠনতন্ত্র বিরোধী। ডাকসু গঠনতন্ত্রে এমন কোন ধারা নেই যে ধারানুসারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) এই ধরনের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিতে পারে। বাংলাদেশ সংবিধান যেখানে প্রত্যেক নাগরিকের মত প্রকাশ ও রাজনীতি করার অনুমতি প্রদান করে সেখানে ডাকসু কর্তৃক এই ধরনের অসাংবিধানিক সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র বাংলাদেশের সংবিধানকেই চ্যালেঞ্জ করে না বরং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যেেক মানুষের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলে ।
তিনি আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তার কেন্দ্রস্থল। কোন ধর্ম বা মতাদর্শকে বাদ দিয়ে আদর্শ শিক্ষাঙ্গন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় রয়েছে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অবদান। ক্যাম্পাসে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত বামপন্থি ক্রিয়াশীল সংগঠনগুলোর দাবি বাস্তবায়নেরই নামান্তর। স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি ও উগ্রবাদ দমনের নামে ধর্মীয় রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত অসাংবিধানিক ও অনধিকার চর্চা। ্এজন্য ধর্মীয় রাজনীতি বন্ধ নয় বরং সকল মত ও মূল্যবোধ চর্চার পথ সুগম রেখে গণতান্ত্রিক ও আদর্শ শিক্ষাঙ্গন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তিনি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ডাকসু কর্তৃক যে বিতর্কিত ও অসাংবিধানিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে সেটি বাতিল করা না হলে তালামীযে ইসলামিয়া এদেশের সচেতন শিক্ষার্থীদের নিয়ে বৃহৎ আন্দোলনের ডাক দেবে।
বুয়েট হলে আবরার হত্যাকা-ের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যাপীঠে এ ধরণের হত্যাযজ্ঞ কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। শুনেছি খুনিরা নাকি একটি প্রভাবশালী ছাত্রসংগঠনের বুয়েট শাখার দায়িত্বশীল। যা হতবাক হওয়ার মত সংবাদ। ছাত্রসংগঠনের কর্মীদের সন্ত্রাসবাদে বিশ্বাসী হওয়া চরম লজ্জাজনক এবং এটা দেশ ও জাতির জন্য অশুভ সংকেত। তিনি জাতীয় উন্নতি, শান্তি ও শৃঙ্খলার স্বার্থে শিক্ষাঙ্গণে সন্ত্রাসবাদের মূলোৎপাটন করতঃ অনতিবিলম্বে আবরার ফাহাদের খুনিদের গ্রেফতার ও সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকর নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহবান জানান।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূনূর রহমান লেখনের পরিচালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি মাসুম আহমদ, সহ-সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ উসমান গণি, ঢাকা মহানগর আল ইসলাহর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আনোয়ার হোসাইন সালেহী, কুমিল্লা জেলা সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাওলানা রুহুল আমীন, তালামীযের কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক খন্দকার ওজিউর রহমান আসাদ, অফিস সম্পাদক আব্দুল মুহিত রাসেল ও সহ অফিস সম্পাদক তৌরিছ আলী।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ঢাকা মহনগর তালামীযের সভাপতি মুখতার আহমদ, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় সভাপতি সাঈদ আহমদ চৌধুরী, সিলেট মহানগর সভাপতি জাহেদুর রহমান, মৌলভী বাজার জেলা আহবায়ক আব্দুল জলিল, কুমিল্লা জেলা সভাপতি রবিউল ইসলাম, হবিগনজ জেলা সভাপতি নাসির উদ্দিন খান, নেত্রকোনা জেলা সভাপতি আব্দুস সামাদ, সুনামগনজ জেলা সভাপতি ছালিক আহমদ সুমন, সিলেট পশ্চিম জেলা সাধারণ সম্পাদক কবির আহমদ, পূর্ব জেলা সাধারণ সম্পাদক হোসাইন মোহাম্মদ বাবু ও ময়মনসিংহ জেলা সাধারণ সম্পাদক মামুন আহমদ প্রমূখ। -বিজ্ঞপ্তি