কামরুল ইসলাম:
হাফিজ ইফজাল আহমদের মৃত্যুকে কোনোভাবেই স্বাভাবিক মৃত্যু মনে করে নি বাংলা টেলিগ্রাম। তাই অনুসন্ধিৎস্যু চোখে বিশ্লেষণধর্মী একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ফ্রান্সের প্যারিস থেকে প্রকাশিত এই পত্রিকাটি। আর এতেই নড়েচড়ে বসে নিহতের পরিবারসহ সংশ্লিষ্ট সকলেই।
তারই ফলস্রুতিতে সিলেটের এমসি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী হাফিজ ইফজাল আহমদকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করছেন তার মা আছারুন নেছা। ছেলের মৃত্যুর ১৪দিন পরও মৃত্যুরহস্য উদঘাটন না হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করে তিনি ছেলের মৃত্যর রহস্য উদঘাটন ও সুষ্ঠু বিচারের দাবিও জানিয়েছেন।
বুধবার (৮ জুলাই) সিলেট প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান। সিলেট নগরীর উপশহর বি ব্লকের ১৮ নং রোডের ৩ নং বাসা বাহার মঞ্জিলে বোনের বাসায় থাকতেন ইফজাল আহমদ। গত ২৫ জুন সকালে ওই ভবনের নিচে তার লাশ পাওয়া যায়। কানাইঘাটের ঝিংগাবাড়ি ইউনিয়নের কাপ্তানপুরে নিজ গ্রামে দাফন-কাফন শেষে ২৬ তারিখে শাহপরান থানায় এ নিয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়।
নিহত ইফজালের মা আছারুন নেছার পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তার চাচাতো ভাই গিয়াস উদ্দিন। লিখিত বক্তব্যে তার মা দাবি করেন, তার ছেলে ছাদ থেকে পড়ে মারা যায়নি। তাকে কে বা কারা হত্যা করেছে।’
তিনি বলেন, অনেকে দোষারোপ করছেন এবং বলছেন- ইফজালের পরিবার এখন পর্যন্ত মামলা করেনি কেন? আমার অন্য ছেলেরা প্রবাসে থাকার কারণে মেয়ের ভাসুর আবুল হোসাইনকে মামলা করার জন্য পাঠানো হয়েছিলো; সাথে ছিলেন কানাইঘাট উপজেলার ৮ নং ঝিংগাবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্বাস উদ্দিনসহ কয়েকজন। আবুল হোসাইন অপমৃত্যুর এই আবেদন দাখিল করেন। পরিবারের পক্ষ থেকে উনাকে যেভাবে বলে পাঠানো হয়েছিল থানায়, দেখা যায় অপমৃত্যু মামলায় আমাদের কথার কোন প্রতিফলন নেই।
তবে, এটাকে অপমৃত্যু বলে বিশ্বাস করতে চান না ইফজালের মা আছারুন নেছা। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু, আজ ১৪দিন হয়ে গেলো, এখনও জানতে পারিনি আমার ছেলেকে কে বা কারা হত্যা করেছে?
তিনি সুষ্ঠু ও অধিকতর তদন্তের মাধ্যমে তার সন্তানের মৃত্যু রহস্য উদঘাটন করে খুনিদের চিহ্নিত করার দাবি জানান। বলেন, অধিকতর তদন্তের স্বার্থে শাহপরান থানায় দায়েরকৃত মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) অথবা অন্য কোন বিশেষায়িত সংস্থার কাছে হস্তান্তরের দাবি জানাচ্ছি।’
নিহত ইফজালের মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং সিলেটের ডিআইজি, পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসকসহ আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট সকল দফতরের দৃষ্টি আকর্ষণ ও সহযোগিতা কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ‘অপমৃত্যু’ মামলার বাদী আবুল হোসেন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আমি হত্যা মামলা করতে চেয়েছিলাম। বারবার চেষ্টার পরও শাহপরান থানা পুলিশ হত্যা মামলা নিতে রাজি হয়নি।’’
এ সময় নিহত ইফজালের আপন চাচাতো ভাই আনছার উদ্দিনসহ আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-শুভাকাঙ্ক্ষীরা উপস্থিত ছিলেন।