রকিব আল হাফিজ
হযরত মাওলানা ইলিয়াছ উদ্দিন আহমেদ (রহ.) প্রাচীন জনপদ শিল্পনগরী ছাতকের সৈদেরগাঁও ইউনিয়নে’র কাকুরা গ্রামের (তালুকদার বাড়িতে) এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৪৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন।
বাবা মরহুম আলহাজ্ব আনজব আলী তালুকদার এবং মা মরহুমা আরিজা বিবি। ঘটনাক্রমে চাচা মরহুম হাফিজ রওশন আলী তালুকদারের বিয়ের দিনে জন্ম হয়েছিলো বলে সবাই আদর করে “নৌশা” বলে ডাকতেন।
তিনি জালালপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন। কিন্তু বাবার ঐকান্তিক ইচ্ছে হলো ছেলেকে আলিম বানাবেন। ফলশ্রুতিতে ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি প্রতিষ্ঠান সৎপুর কামিল মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়ে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও মুহতামিম বিশিষ্ট বুজুর্গ আল্লামা গোলাম হোসাইন (রহ.) এর অভিভাবকত্বে রেখে আসেন। আর বলেন যে,আমার ছেলে যেন প্রকৃত আলিম হিসেবে গড়ে ওঠে।তখনকার সময়ে মাদ্রাসার ছাত্রাবাস ছিলো না,লজিং নিয়ে পড়তে হতো।
বাবার আগ্রহের কথা শুনে আল্লামা গোলাম হোসাইন (রহ.) তাকে নিজের বাড়িতে লজিং এর ব্যবস্থা করে দেন। পরে কিছুদিন আতাপুর,সোনাপুর ও মিরপুরে লজিং ছিলেন। শেষমেষ মাদ্রাসার ছাত্রাবাস যখন হলো তখন ছাত্রাবাসে’ই জায়গা করে নেন। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই চারিত্রিক মাধুর্য ও প্রখর মেধার কারণে মুহতামিম সাহেবের প্রিয়ভাজন ছাত্র হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে তুলেন।
প্রখ্যাত হাদিস বিশারদ শায়খুল হাদিস আল্লামা হবিবুর রহমান মুহাদ্দিস সাহেব, প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন হযরত আল্লামা আব্দুল জব্বার গোটারগ্রামী (রহ.)ও আল্লামা মুজাহিদ উদ্দিন চৌধুরী দুবাগী সাহেব (রহ.) এর পরম স্নেহ মমতায় সৎপুর কামিল মাদ্রাসা থেকে ১৯৬৭/১৯৬৮ সেশনে কৃতিত্বের সাথে আলিম পাস করেন। এর’ই মধ্যে ধারন বাজারে অবস্থিত নতুন বাজার বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে খন্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। সৎপুর কামিল মাদ্রাসা থেকে’ই ১৯৬৯/১৯৭০ সেশনে ফাজিল পাস করেন।
ফাজিল পাস করার পর নতুন বাজার বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসাবে স্হায়ী নিয়োগ পান। কর্মজীবন বা শিক্ষকতার মুল পর্ব শুরু এখান থেকেই। তখনকার সময়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মরহুম জনাব আবু নছর চৌধুরী। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটে।
অত:পর দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৩ সালে সৎপুর কামিল মাদ্রাসা থেকে মাদ্রাসা শিক্ষার সর্বোচ্চ ডিগ্রি কামিল (হাদীস) পাস করেন। ইতোমধ্যে স্বীয় পীর ও মুর্শীদ আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (রহ.) এর কাছ থেকে ইলমে কিরাতের সনদ লাভ করেন ৷ কৃতিত্বের সাথে কামিল পাশ করে বাবার মনোবাসনা পূর্ণ করতে বাড়িতে ফিরে আসেন।
কাছ থেকে বাবা দেখছেন যে ছেলেকে আলিম বানালেন অথচ ছেলে পড়াচ্ছেন স্কুলে৷ এটা তাকে খুবই পীড়া দিত৷ বাবার ভীষণ ইচ্ছে ছেলে মাদ্রাসাতে পড়াবে, কিন্তু সে ইচ্ছে আড়ালে পড়ে যায়।
১৯৭৫ সালে স্কুলে শিক্ষক থাকাকালীন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন। তারপর বিশিষ্ট আলেম হযরত মাওলানা বশির আহমেদ (রহ.) এর প্রতিষ্ঠিত খরিদিচর সিনিয়র আলিম মাদ্রাসায় সহকারী মাওলানা (শিক্ষক) হিসেবে চাকুরির বন্দোবস্ত হয়ে যায় এবং শুরু হয় দ্বীনের খেদমত।
বর্ষাকালে যাতায়াত ব্যবস্থার চরম অসুবিধা থাকায় খরিদিচর গ্রামে লজিং নিয়ে থাকতেন, নতুবা বাড়ি থেকেই মাদ্রাসায় পড়াতে যেতেন। তখন হঠাৎ করে বিদেশ যাবার মনোবাসনা চলে আসলো। ১৯৭৭ সালের শেষ দিকে পাড়ি জমালেন ইংল্যান্ডের উদ্দেশ্যে। বাবার মন ভীষণ খারাপ যে, আমি চাইলাম কী, আর আদরের ছেলে করছেন কী? তাই ইংল্যান্ডে পৌঁছে থাকা হলো না, মাত্র ৫ দিন অবস্থান করে ভিসা জটিলতার কারণে দেশে ফিরে আসেন।
দেশে এসেও বিদেশ যাওয়ার চিন্তা থেকে মুক্ত হতে পারেননি- ১৯৭৮ সালে মরহুম জনাব আবু নছর চৌধুরী ও আরো ৫/৬ জন সহযাত্রী মিলে পাড়ি জমালেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানে। সেখানে দিনকাল বেশ ভালোই চলছিলো। এ দিকে বাবা নাখোশ, তাঁর ভীষণ ইচ্ছে ছিলো ছেলে ইলমে দ্বীনের খেদমত করবে- অথচ তিনি বাস করছেন বিদেশে!
এর’ই মধ্যে “ইরাক-ইরান যুদ্ধ” বেঁধে গেলো এবং ‘নৌশা মাওলানা’ও বিদেশ জীবনের ইতি টেনে চলে এলেন স্বদেশে।ছেলেকে পেয়ে বাবা ভীষণ খুশী হলেন। দেশে আসার পর আকস্মিকভাবে মাওলানা ইলিয়াছ উদ্দিন আহমেদ(রহ.)এর দুই সন্তান বড় মেয়ে ও মেজো ছেলের মৃত্যুতে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন।
ঠিক তখনই তাঁর বাবা তাকে শেষবারের মতো বলেই দিলেন-তোমাকে দিয়ে বিদেশ হবে না, তোমাকে ইলমে দ্বীনের খেদমতে আত্মনিয়োগ করতে হবে। বাবার এমন নির্দেশে তাঁর চিন্তা ও চেতনায় ধারন বাজারে একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করার ভীষণ ইচ্ছে জাগ্রত হলো।
উল্লেখ্য যে কওমী’র বিশিষ্ট আলেম মরহুম মাওলানা আব্দুল কাদির সাহেব ও সহযোগীদের উদ্যোগে শুরু হওয়া মাদ্রাসা’টি অনিবার্য কারণবশত বন্ধ হয়ে যায়। তারপর মরহুম মাওলানা শামসুদ্দিন সাহেব চেষ্টা করলেও নানাবিধ জটিলতার কারণে সফল হতে পারেননি। চার থেকে পাঁচ বছরের মাথায় মাদ্রাসার অস্তিত্ব সম্পূর্ণরূপে বিলীন হয়ে যায়। মহান আল্লাহ্ তাদের এই চেষ্টাকে কবুল করুন।
অস্তিত্ব বিলীন হওয়া মাদ্রাসার জায়গাটি মাওলানা ইলিয়াছ উদ্দিন আহমেদ (রহ.) এর চাচাত ভাই মরহুম ইন্তাজ আলী সাহেব ও মরহুম মখলিছ আলী সাহেব মাদ্রাসার নামে দান করলে, স্বপ্নপূরণে নতুন করে সরকারী নির্দেশনা অনুসরণ করে,এলাকার সর্বজনের ঐকান্তিক চেষ্টা, বিদেশে অবস্থানরত এলাকাবাসী ও ছোট ভাই লন্ডন প্রবাসী সমাজসেবী হাজী আইয়ুব আলী সাহেব ও বিশিষ্ট সালিশ ব্যক্তিত্ব মরহুম হাজী ফজর আলী সাহেবের সুযোগ্য সন্তান লন্ডন প্রবাসী ইছহাকুর রহমান বাবুল সাহেবের একান্ত সহযোগিতায় নূতন বাজার দাখিল মাদ্রাসার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে ১৯৮১ সালের জানুয়ারি থেকে মাদ্রাসার কার্যক্রম শুরু করেন। মাওলানা ইলিয়াছ উদ্দিন আহমেদ (রহ.) নিজে সুপারের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। এরমাধ্যমে আবার তিনি শিক্ষকতা জীবনে ফিরে আসেন। তাঁর এই সিদ্ধান্তে বাবা ভীষণ খুশী হলেন।
তখনকার সময় মাদ্রাসার শিক্ষকরা তাঁর মুখের দিকে চেয়ে স্বল্পতম বেতনে পড়াতেন,যা ছিলো মাসিক ২০০ থেকে ৪০০ টাকা। উক্ত মাদ্রাসার মূল ভবনে’র প্রতিটি বালুকণার সাথে মাওলানা ইলিয়াছ উদ্দিন আহমেদ (রহ.) এর কষ্টের স্মৃতি জড়িয়ে আছে। ইট,বালু ও পাথর অনেক সময় নিজে খুঁড়ে খুঁড়ে ধুয়ে দিতেন, যার প্রত্যক্ষ স্বাক্ষী এলাকাবাসী।
এর’ই মধ্যে শামছুল উলামা আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা (রহ.)এর খাস দোয়া ও সার্বক্ষণিক সহযোগিতায় মাদ্রাসার উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি হতে থাকে। ছাত্র/ছাত্রীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে এবং দাখিল পরীক্ষার ফলাফলও আশানুরূপ হতে থাকে।
মাদ্রাসার দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশে’র তৎকালীন মহামান্য রাষ্ট্রপতি লেফটেন্যান্ট জেনারেল মরহুম হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ ‘সুনামগঞ্জ থেকে সিলেট’ সড়ক পথে সফরকালে ধারন বাজারে অনুষ্ঠিত পথসভায় নতুন বাজার বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও নূতন বাজার দাখিল মাদ্রাসার জন্য এক লক্ষ টাকা করে মোট দুই লক্ষ টাকার সরকারি অনুদান ঘোষণা করেন।
সরকারে’র পক্ষ থেকে এটাই মাদ্রাসার জন্য প্রথম বড় ধরনের অনুদান। এই অনুদানের টাকা দিয়ে মাদ্রাসার মুল ভবনের ২য় তলার কাজ শুরু করেন। যার ফলে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের স্বীকৃতি এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে এমপিও-ভূক্ত হয়।
তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় মাদ্রাসায় দারুল ক্বেরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাষ্টের শাখা ও রাবে চূড়ান্ত পরীক্ষার কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। সব মিলিয়ে মাদ্রাসাটি এলাকার ইসলামী শিক্ষা বিস্তারে অনন্য ভূমিকা পালন করে। অত্র এলাকায় ক্বেরাত শিক্ষার বিভিন্ন শাখা খোলার জন্য মাওলানা ইলিয়াছের পরামর্শ ও সহযোগিতা ছিল অপরিসীম।
এলাকাতে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের একজন নিবেদিত সিপাহশালার হয়ে তিনি সর্বদাই জোরালো ভূমিকা রাখেন। ধারন বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সংস্কার করে বিল্ডিং নির্মাণে তিনি যে নিরলস শ্রম দিয়েছেন তা এখনো এলাকাবাসী মনে রেখেছেন।
১৯৮৮ সালে মাওলানা ইলিয়াছ উদ্দিন আহমেদ (রহ.) প্রথমবারের মতো হজ্বব্রত পালন করেন। এরপর তিনি আরো তিনবার হজ্বব্রত পালন করার সৌভাগ্য লাভ করেন।
দায়িত্ব পালনের দীর্ঘ ১৪ বছর পর ১৯৯৪ সালে স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়ার প্রাক্কালে তাঁর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠজন বিশিষ্ট আলেম মাওলানা সিকন্দর আলী সাহেবের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করে চাকুরি থেকে অবসরে চলে যান। অবসর নিলেও অকৃত্রিম ভালবাসার কারণে মাদ্রাসার প্রতি সবসময়ই বিশেষ খেয়াল থাকতো।
অবসর সময়ে পারিবারিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আলী অটো রাইস মিল ও আপন বড় ভাই হাজী ইছাক আলী মহাজন সাহেবের এর সুপ্রতিষ্ঠিত ব্যবসায় সহযোগিতা করেন। এছাড়াও কাকুরা জামে মসজিদ সংস্কার করে পুনঃনির্মাণে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।
নিজের পরিবারের প্রতি বিশেষ খেয়াল দেওয়ার নিমিত্তে ও ইংল্যান্ডের প্রতিষ্টিত ব্যবসায়ী, বিশিষ্ট সমাজসেবী আলহাজ্ব বশির আহমেদ সাহেবের আমন্ত্রণে ২০০২ সালে আবারো ইংল্যান্ডে পাড়ি জমান। সেখানে অবস্থানকালে ওয়াটফোর্ডের একটি চার্চের কমিউনিটি হলরুমে পবিত্র রমজান মাসে তারাবিহ নামাজের ইমামতি করেন। সাথে সাথে বাংলাদেশী কমিউনিটির স্হানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের কাছে একটি মসজিদ নির্মাণের আহবান জানান। ইংল্যান্ডের বুশি হিথ,প্লেমাউথ,এসেক্সসহ বিভিন্ন শহর সফর করে-বছর খানেক পরে দেশে ফিরে আসেন। দেশে এসে সস্ত্রীক ২০০৪ সালে আবারো হজ্বব্রত পালন করে পুরোপুরি অবসর জীবনযাপনে চলে যান।
জীবনচারণে সবার সকল ইচ্ছেগুলো পূর্ণ হয় না, আবার কিছু কিছু পূর্নতাও পায়! মহান আল্লাহর অমোঘ নিয়মে নির্ধারিত সময়ে ইচ্ছেগুলো ডানা মেলে এবং অপূর্ণ ইচ্ছেগুলো কখনও বংশ পরিক্রমায় নতুন পথের দিশা দেখায়! হযরত মাওলানা ইলিয়াছ উদ্দিন আহমেদ (রহ.) প্রবাস জীবনে সফলকাম না হলেও বাবার দেখানো পথে হেঁটে হেঁটে তাঁর সুযোগ্য তিন সন্তান’ই- মাছুম জামান, মাওলানা মামুনুর রশিদ ও নুসরাত রুমি দেশে উচ্চ শিক্ষা নিয়ে এখন ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের স্হায়ী বাসিন্দা। শুকরিয়া আল্লাহ্’র যে তাঁরা দাদা ও বাবার দেখানো পথে’ই সফলভাবে হাঁটছেন।
২০০৫ সালের ১৪ই জুলাই ঢাকার আল-রাজি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আলহাজ্ব হযরত মাওলানা ইলিয়াছ উদ্দিন আহমেদ (রহ.) নশ্বর এ পৃথিবীর মায়া ছিন্ন করে মাওলার ডাকে সাড়া দিয়ে পরপারে পাড়ি জমান (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
ইলমে দ্বীনের মহান এ খাদিম মসজিদের পাশেই পারিবারিক কবরস্থানে নিজ দাদা-দাদী, বাবা-মা ও শিশুকালে গুজরে যাওয়া তাঁর দুই মেয়ে ও দুই ছেলের কবরের কিনারায় চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন। ৬০ বছর জীবনে তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে, এক মেয়েসহ অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী, আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
মাদ্রাসা ময়দানে আয়োজিত তাঁর প্রথম ঈসালে সাওয়াব মাহফিলে শামসুল উলামা আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা (রহ.) এর বয়ানের মূল বিষয় ছিলো-“দ্বীনের খেদমতে যারা জীবন অতিবাহিত করে আল্লাহ্’র দরবারে তাদের মর্যাদা সুউচ্চ”। তিনি এলাকাবাসীকে মাওলানা ইলিয়াছ উদ্দিন আহমেদ (রহ.) এর মতো দ্বীনের খেদমত করা ও মাদ্রাসার প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখার আহবান জানান। ছাহেব ক্বিবলা আরো বলেন যে, ‘চোখের পানি এত’ই শক্তিশালী যা দোজখের আগুনকে নিভিয়ে দেয়’।
অত্র এলাকায় ‘সুপারিন্টেনডেন্ট হুজুর’ হিসেবে আজো মানুষের মুখে মুখে মাওলানা ইলিয়াছ উদ্দিন আহমেদ (রহ.) নাম গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় উচ্চারিত হয়। গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠ নারী ও পুরুষেরা এখনো যারা জীবিত আছেন তারা যে কোন মিলাদে’র দোয়ায় বা মাহফিলে তাদের কান্নাজড়িত কন্ঠে মোনাজাতরত অবস্থায় “সুপারিন্টেন্ডেন্ট সাহেব”কে খুঁজেন মনের অজান্তেই।
হে আল্লাহ, ইলমে দ্বীনের এ খাদিমের এসব খিদমতকে ছদকায়ে জারিয়া হিসেবে কবুল করে,তাঁকে ক্ষমা করে ওপারে সম্মানিত করো। তোমার এ বান্দাকে জান্নাতের উচ্চ মোকাম দান করো হে রাব্বে কারিম৷।
(তথ্যসূত্রঃ মাছুম জামান, যুক্তরাজ্য।)
রকিব আল হাফিজ: লেখক ও গবেষক।