সোমবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোনো নির্দেশনাই মানছে না মানুষ




ভাইরাসের বিস্তার রোধে সরকার সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনা দিলেও তা উপেক্ষা করে ঘর থেকে বের হয়েছে শত শত মানুষ। সড়ক-মহাসড়কে প্রাইভেট কার, সিএনজি অটোরিকশা, ইজিবাইক ও রিকশার ভিড়। রাজধানীর পল্টন, গুলিস্তান, বাংলামোটরের রাস্তার ফাঁকা চিত্র আগের মতো নেই। একই অবস্থা গুলশান, ধানমন্ডি ও উত্তরা এলাকার। পুলিশ মানুষকে ঘর থেকে বের হতে নিরুৎসাহিত করার মধ্যেই তাদের দায়িত্ব সীমাবদ্ধ করে রেখেছে। যে কারণে মানুষ এখন অনেকটাই বেপরোয়া। মিরপুর জোনের এডিসি এ প্রসঙ্গে বলেন, আমরা প্রাইভেট কারগুলো থামিয়ে যাত্রীদের বোঝানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু তারা নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রয়োজনের কথা জানাচ্ছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাস্তায় কর্তব্যরত একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, এভাবে মানুষকে নিরুৎসাহিত করে কোনো লাভ হবে না। অ্যাকশনে না গেলে দিন দিন পরিস্থিতির অবনতি হতেই থাকবে।আজ সকালে ঢাকার শানিরআখরার কাঁচাবাজারে সরেজমিনে দেখা গেছে, সরাদেশে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার যে দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে তা মেনে চলছেন না বাজরে আসা বিপুল সংখ্যক মানুষ।

এই এলাকার বেশিরভাগ মানুষ মাস্ক পরছেন, তবে কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে প্রয়োজনীয় এক মিটার দূরত্ব বজায় রাখাকে নিরাপদ বলে মনে করা হলেও তা না রেখেই বাজারে ভিড় করছেন মানুষজন। এমনকি এলাকার চায়ের দোকানগুলোতেও এক সাথে অনেক মানুষকে বসে আড্ডা দিতে দেখা গেছে। অথচ পুলিশ তাদেরকে কিছুই বলছে না। যাত্রাবাড়ীতে কাঁচাবাজারের দেয়ালগুলোতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার জন্য সাধারণ মানুষকে মনে করিয়ে দেয়ার মতো কোনো দেয়ালিকা ও প্রচারণা দেখা যায়নি।
ওই এলাকার এক ওষুধের দোকানের মালিক রকিবুর রহমান জানান, তারা ক্রেতাদেরকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নিয়ে সচেতন করার চেষ্টা করছেন তবে সাধারণরা নির্দেশনা মানার ক্ষেত্রে অনীহা দেখায় সেই প্রথম দিন থেকেই।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৬২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোস্তাক আহমেদ বলেন, তারা সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন তবে তারা পেরে উঠছেন না। তিনি বলেন, মসজিদগুলোতে নামাজে অংশ নেয়া এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে ইতিমধ্যে চিঠি পাঠিয়েছি। আমরা আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। এজন্য জনগণের সহযোগিতা প্রয়োজন।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপ কমিশনার (প্রশাসন) ইফতেখারুল ইসলাম বলেন, সাধারণ মানুষ পুলিশের সাথে লুকোচুরি খেলছে তাই তাদেরকে বাড়িতে রাখার কাজটি খুব কঠিন হয়ে যাচ্ছে। কোনো কারণ ছাড়াই মানুষ বাসা থেকে বের হচ্ছে। তিনি বলেন, ভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাস করতে সাধারণ মানুষের বুঝা উচিত তাদেরকে বাড়িতে থাকার জন্যই সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। যদিও আমরা সাধারণ মানুষকে বিষয়টি বোঝানোর জন্য অনেক চেষ্টা করছি, তবুও তারা নির্দেশনা যথাযথভাবে মানছে না।

করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে সরকার গত ২৯ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত সেই ছুটি বর্ধিত করা হয়েছে। সেই সাথে জনসমাগম সীমিত ও গণপরিবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা নিশ্চিতে সেনাবাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করেছে।

সম্পাদক: শাহ সুহেল আহমদ
প্যারিস ফ্রান্স থেকে প্রচারিত

সার্চ/খুঁজুন: