করোনাভাইরাসে আবারও একদিনে রেকর্ড মৃত্যু হল যুক্তরাষ্ট্রে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে প্রাণ হারান ২৪০৭ জন। এর আগে ১০ এপ্রিল ২১০৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল। একদিনে সর্বোচ্চ ২৮৫ জনের মৃত্যু দেখেছে জার্মানিও। বিশ্বজুড়েই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।
এরই মধ্যে আক্রান্ত ২০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে, মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৩২ হাজার। ফ্রান্সে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় লকডাউনের মেয়াদ আরও চার সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে। সিঙ্গাপুরে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করেছে দেশটির সরকার। স্পেনে লকডাউন শিথিলের পর সংক্রমণের হার বেড়েছে। খবর বিবিসি, এএফপি, রয়টার্সসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের।
বাংলাদেশ সময় বুধবার রাত ১টা পর্যন্ত ওয়ার্ল্ডওমিটারসের তথ্য অনুযায়ী বিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ লাখ ৩২ হাজার ৮৮৯ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২০ লাখ ৫১ হাজার ৮ জন। এর মধ্যে ৫ লাখ ৭ হাজার ৮৯০ জন সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে একদিনে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৬ হাজার ৬৩৩ জন। এ নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬ লাখ ২২ হাজার ৯২৩ জন। মৃতের সংখ্যা ২৭ হাজার ৫৮৬। যুক্তরাষ্ট্রে প্রাদুর্ভাবের মূল কেন্দ্র হয়ে দাঁড়িয়েছে নিউইয়র্ক। এখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দুই লাখ ৩৩ হাজার ৩৪৮ জন এবং মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ৮৪২।
এদের মধ্যে শুধু নিউইয়র্ক শহরেই আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ১০ হাজার ৪৬৫ জন এবং মৃতের সংখ্যা সাত হাজার ৯০৫। সোমবার ওয়াইওমিং অঙ্গরাজ্যে কোভিড-১৯-এ প্রথম একজনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সব অঙ্গরাজ্য ও নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল করোনাভাইরাসের মৃত্যুর মিছিলে যোগ দিয়েছে।
নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের পর সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়েছে নিউজার্সি অঙ্গরাজ্যে। এখানে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৮ হাজার ৮২৪ জন ও মৃতের সংখ্যা দুই হাজার ৮০৫। অবস্থা এত ভয়াবহ যে বলা হচ্ছে, নিউইয়র্কে কোভিড-১৯ পরীক্ষার আগেই মারা যাচ্ছেন মানুষ।
ইতালিতে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা কোনোভাবেই যেন নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৬০২ জন। এ নিয়ে মোট মারা গেছেন ২১ হাজার ৬৪৫ জন। দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৬৫ হাজার ১৫৫ জন। যুক্তরাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৭৭৮ জন।
এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা ১২ হাজার ৮৬৮। দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৯৮ হাজার ৪৭৬ জন। ব্রিটেনের স্বাস্থ্য বিভাগের এক-তৃতীয়াংশ কর্মীই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। দেশটিতে মুসলিমদের জন্য খোঁড়া হচ্ছে গণকবর। পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাওয়ায় ব্রিটেনে আগামী ৭ মে পর্যন্ত লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে।
লকডাউন তোলা নিয়ে রাজ্যগুলোর সঙ্গে ট্রাম্পের বিরোধ : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে লকডাউন তুলে নেয়ার ব্যাপারে নিজের কর্তৃত্বকেই চূড়ান্ত বলে দাবি করেছেন। বিভিন্ন রাজ্যের গভর্নর এবং আইন বিশেষজ্ঞদের উপেক্ষা করতে পারেন বলেও তিনি দাবি করেন।
সোমবার হোয়াইট হাউসে এক বাকবিতণ্ডাপূর্ণ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন- বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের প্রশাসন আলাদাভাবে ঘরের ভেতর থাকার যে নির্দেশ জারি করেছে, তা অগ্রাহ্য করার ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের আছে কি না।
এর উত্তরে ট্রাম্প এসব কথা বলেন। ট্রাম্প বলেন, আমেরিকায় ব্যবসা-বাণিজ্য খুলে দিয়ে অর্থনীতিকে আবার সচল করার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করছে তার প্রশাসন।