এমদাদ চৌধুরী দীপু, নিউইয়র্কঃ
যুক্তরাস্ট্রে গৃহবন্ধী জীবনের ৭৭টি দিবস অতিবাহিত হয়েছে। ৯০ হাজার অতিক্রম করেছে মৃত্যুু বরনের সংখ্যা, এটি ইতিহাস, একটি রাস্ট্রে এত মৃত্যু! এটি বিস্ময়ের শুরু কিংবা শেষ নয়,১৫ লাখ অতিক্রম করেছে শনাক্ত হওয়ার সংখ্যা। বিস্ময়কর হলো গত ১৬এপ্রিল থেকে ১৬মে শনিবার একমাসেই শনাক্ত হয়েছেন ৮লাখ ৩০ হাজারের উপরে। মৃত্যু বেড়েছে ৫৫ হাজার ৫৩৩জনের।এর বিপরীতে সুস্থ হয়েছেন ২লাখ ৮০ হাজার রোগী।
যুক্তরাস্ট্রে করোনা পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর থেকে পরতে পরতে অনেক বিস্ময়,এই তালিকায় দেশের অঙ্গরাজ্য নিউইয়র্কে এখন শনাক্ত ৩লাখ ৫৮ হাজার এর উপরে, পৃথিবীর কোন দেশে এত শনাক্ত নেই যা একটি অঙ্গরাজ্যে হয়েছে। ১৬ এপ্রিল থেকে ১৬ মে এক মাসে এখানে শনাক্ত হয়েছেন একলাখ ৩২হাজার প্রায়। করোনা এক সময় বিদায় নিবে, তবে যুক্তরাস্ট্রে রেখে যাবে বিস্ময়ের নানা ইতিহাস। মোট মৃত্যু এবং সুস্থতা বাদ দিলে আজো চিকিৎসাধীন অথবা পর্যবেক্ষনে রয়েছেন ১০ লাখ ৭৮ হাজার আমেরিকান। ৩৪ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল গত ১৬এপ্রিল পর্যন্ত একমাস পরে ১৬ মে সেটি দাড়িয়েছে ৯০ হাজার ১১৩জনে। নিউইয়র্কে মৃত্যু এখন ২৮ হাজার ১৩৪জনের,অথচ একমাস আগে ফিরে থাকালে দেখা যায় ১৬এপ্রিল মৃত্যু রেকর্ড করা হয়েছিল।১৬ হাজার ১৬জন।
করোনার ইতিহাসে মৃত্যু,শনাক্ত হওয়া যেমন উল্লেখ করার মত স্মরণ করার বিষয় তেমনি এখানে টেস্টিং এর সংখ্যা বিস্ময় সৃস্টি করেছে বিশ্বময়। এ পর্যন্ত যুক্তরাস্ট্রে টেস্ট সম্পন্ন হয়েছে এককোটি ১৯লাখ মানুষের শুধু নিউইয়র্কে টেস্ট করা হয়েছে ১৪লাখের উপর মানুষের।
এত হতাশাজনক বিস্ময় যেমন রয়েছে তেমনি আছে আশাব্যাঞ্জক বিস্ময়ের গল্প। করোনাকালে বিস্ময় এবং আশা-হতাশার সব গল্প মানুষের জীবন,মরনের গল্প। এই গল্পে রয়েছে মৃত্যুর দোয়ার থেকে ফিরে আসার বিস্ময়কর তথ্য। গত ১৬ এপ্রিল মাত্র ৫৭ হাজার মানুষ সুস্থ হওয়ার খবর ছিল যুক্তরাস্ট্রে সেটি এক মাসে বেড়ে দাড়িয়েছে ৩লাখ ৩৯হাজারে। এক মাস পিছনে ফিরে থাকালে এটি যুক্তরাস্ট্রবাসীকে আশাবাদী করে তুলার মত পরিসংখ্যান একমাসে সুস্থ হয়েছেন ২লাখ ৮০ হাজার মানুষ। এদিকে নিউইয়র্কে একমাস আগে ছিল ১৭ হাজার মানুষের সুস্থ হওয়ার এখন যা উন্নীত হয়েছে ৬০ হাজারের উপরে। সুস্থ হওয়ার সংখ্যা পুরো যুক্তরাস্ট্র এবং নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে উন্নতির ধারায় রয়েছে।
এদিকে শনাক্ত বিবেচনায় পৃথিবীর শীর্ষ ৮টি দেশের পর চলে এসেছে নিউজার্সীতে শনাক্ত হওয়ার সংখ্যা এখানে একলাখ ৪৬ হাজার শনাক্ত যা পৃথিবীর অন্তত ২শটি দেশের উপরে। এখন চীন, এর উপরে, অঙ্গরাজ্য ম্যাসাচুসেটটে শনাক্ত হওয়ার সংখ্যা যেটি ৮৫হাজার প্রায়,যা কানাডার উপরে সৌদি আরব,বেলজিয়ামের উপরে অঙ্গরাজ্য ক্যালিফোর্নিয়া,ও প্যানসেলভেনিয়া,দেশ হিসেবে সৌদির অবস্থান ১৬তম স্থানে। যুক্তরাস্ট্রে এউ দুই রাজ্যে শনাক্ত ৬৫ হাজারের উপরে। বিস্ময়কর তথ্যের কোন শেষ নেই। শনাক্ত বিবেচনায় পাকিস্তান,চিলি,ন্যাদারল্যান্ড এবং মেক্সিকোর উপওে অঙ্গরাজ্য মিশিগান,এখানে শনাক্ত ৫০ হাজারের উপরে,এদিকে দেশ হিসেবে মেক্সিকো ১৭তম স্থানে।
একমাস আগে নিউজার্সীতে শনাক্ত ছিল ৭৫হাজারের উপরে,মাস পরে সেটি একলাখ ৪৬ হাজারে পৌছে গেছে প্রায় দ্বিগুন।একমাস আগে ফিওে থাকালে দেখা যায় অঙ্গরাজ্যে মৃত্যু ছিল ৩৫১৮জন এখন ১০ হাজার ২৫০জন। একটি অঙ্গরাজ্য নয় অন্তত ২০টি অঙ্গরাজ্যে ৭৭দিন ধওে বিস্ময়করভাবে শনাক্ত এবং মৃত্যুর মিছিল চলছে।
নিউজার্সী সহ আরো ৫টি রাজ্যে অবনতি অব্যাহত রয়েছে। এই তালিকায় ম্যাসাচুসেট,ইলিনইস,ক্যালিফোর্নিয়া,পেনসেলভেনিয়া,ও মিশিগান,মেরিল্যান্ড রয়েছে।নিউজার্সীতে একদিনে মোট মৃত্যু ১০,২৬০জন,ইলিনইসে মোট ৪১২৯জন,ম্যাসাচুসেটে মোট ৫৭০৫জন,ক্যালিফোর্নিয়ায় মোট মৃত্যু ৩২০৮জন,পেনসেলবেনিয়ায় মোট মৃত্যু ৪৪৮৯জন,এছাড়া মিশিগান,মোট মৃত্যু ৪৮৮০জন, ম্যারিল্যান্ডে মোট মৃত্যু ১৯৫৭জন,এসব রাজ্যে মৃত্যুএবং শনাক্ত নিয়ন্ত্রনের বাইরে রয়েছে। শনাক্ত এবং মৃত্যু হার দু মাস ধরে উঠা নামা করছে
আবেগ কিংবা রাজনীতি নয় যুক্তরাস্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যের গভর্নররা বার বার বলছেন স্ব স্ব এলাকা এবং রাজ্য লকডাউন তুলে দেয়ার জন্য সব চেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে টেস্ট,ট্রেসিং,এবং স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তা, আশংকা, প্রস্তুতি, সামগ্রিক পরিবেশসহ ৭টি বিবেচনাযোগ্য বিষয়।
এদিকে শিশুদের আক্রান্ত হওয়া নতুন উদ্বেগের কারন নিউইয়র্ক এর জন্য বিশেষ করে নবজাতক থেকে ৪ বছরের শিশরা একণ বেশী আক্রান্ত হচ্ছে । বহুমাত্রিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে জুনের প্রথম সপ্তাহের আগে নিউইয়র্ক লকডাউনমূক্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে মনে করেন পর্যবেক্ষকরা।