ঘর্ণিঝড় আম্পানের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশকে ১১ লাখ ইউরো সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। অতি প্রবল এই ঘূর্ণিঝড়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার জন্যও ৫ লাখ ইউরো অনুদানের ঘোষণা দিয়েছে তারা।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট বিষয়ক কমিশনার আনে লেনারসিস গত বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেন, “ইউরোপীয় ইউনিয়ন আর দেরি না করে দুর্গতদের সহায়তা শুরু করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। ভারতের জন্য ৫ লাখ ইউরো এবং বাংলাদেশে জরুরি পদক্ষেপে সহায়তার জন্য প্রাথমিকভাবে ১১ লাখ ইউরো দিচ্ছে।”
করোনাভাইরাস সংকটের মধ্যে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্পান গত ২০ মে দুপুরের পর সুন্দরবনের কাছ দিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করে।
সে সময় এ ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৫৫ থেকে ১৬৫ কিলোমিটার। সেই সঙ্গে ছিল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১০ থেকে ১২ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস।
পশ্চিমবঙ্গে তাণ্ডব চালিয়ে আম্পান ওই রাতেই পুরোপুরি বাংলাদেশে প্রবেশ করে। বৃষ্টি ঝরিয়ে দুর্বল হয়ে পরদিন পরিণত হয় স্থল নিম্নচাপে।
এ দুর্যোগের মধ্যে দেশের বিভিন্ন জেলায় ঝড়ে গাছ বা ঘর চাপা পড়ে অন্তত ২৩ জনের প্রাণ যায়। প্রবল বাতাসে বহু গাছপালা ভেঙে পড়ে, ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েন দেশের অর্ধেকের বেশি গ্রাহক। উপকূলের বিভিন্ন এলাকার বাঁধ ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বহু মানুষ।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের কমিশনার বলেন, এই ঝড় এমন এক সময়ে আঘাত হেনেছে যখন করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হচ্ছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই সহায়তা দিয়ে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের জরুরি প্রয়োজন মেটানো, মানবিক ত্রাণ সহায়তা এবং করোনাভাইরাস মহামারী থেকে স্বাস্থ্যকর্মীদের রক্ষায় কাজ করা হবে।
ইইউ কমিশনার বলেন, “ভারত ও বাংলাদেশ উভয় দেশে প্রাণহানি এবং ঝড়ো হাওয়া, জলোচ্ছ্বাস ও ভূমিধসে ঘর-বাড়ি, অন্যান্য অবকাঠামো ও জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা জেনে আমি মর্মাহত।”
ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোপারনিকাস ইমারজেন্সি ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস স্যাটেলাইট ম্যাপের মাধ্যমে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে ভারত ও বাংলাদেশকে সহায়তা করেছে বলে জানান তিনি।