রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘের ভূমিকায় বাংলাদেশ অত্যস্ত হতাশ বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
বৃপস্পতিবার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর পিস স্টাডিজ (সিপিএস) ও জাতিসংঘ বাংলাদেশ যৌথভাবে ‘জনগণের প্রয়োজনের সময়ে জাতিসংঘ: বহুপক্ষীয় ব্যবস্থা নিয়ে পুনর্ভাবনা’ শীর্ষক দুই দিনের এক সেমিনারের দ্বিতীয় দিনে এমন মন্তব্য করেন পররাষ্ট্র সচিব।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, জাতিসংঘের কাছে বাংলাদেশের প্রত্যাশার প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা অবশ্যই বহুপক্ষীয় ব্যবস্থার প্রতি আস্থাশীল। তবে আমরা আরো স্বচ্ছ ও দক্ষ জাতিসংঘ চাই। যেখানে জরুরি প্রয়োজনে জাতিসংঘ আরো দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখবে। যাতে সদস্য দেশের প্রত্যাশা পূরণ হয়। তবে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানের বিষয়ে জাতিসংঘের ভূমিকায় আমরা অত্যন্ত হতাশ।’
তিনি বলেন, জাতিসংঘের বর্তমান কাঠামো যে যথেষ্ট কার্যকর নয়। সেটা নিরাপত্তা পরিষদের ভোটাধিকার হোক, প্রবল শক্তিধর দেশগুলোর দ্বৈরথই হোক না কেন। কক্সবাজারে গিয়ে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বললে জানবেন জাতিসংঘের ভূমিকা নিয়ে তারা হতাশ। কারণ তৃণমূলে জাতিসংঘ রোহিঙ্গাদের সহায়তা করলেও মূল সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘ স্পষ্ট কোন পথ নকশা দিচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘে এক ধরনের পরিবর্তনের সুর লক্ষ্য করা যাচ্ছে তবে সব দেশই একইভাবে এই পরিবর্তনে যুক্ত হচ্ছে না। অনেক দেশ দায়িত্বশীল হয়ে সহযোগী হয়ে এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত থাকছে। আবার কোন কোন দেশ বাধাও সৃষ্টি করছে। ফলে জাতিসংঘ এখনও অন্তর্বর্তীকালীন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। জাতিসংঘের ৭৫ তম বর্ষপূর্তিতে এসে ভাবার সময় এসেছে কোথায় আমরা যেতে চাই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, জাতিসংঘের খোলনলচে পরিবর্তনের সময় এসেছে।
ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত রেনসে টেরিঙ্ক বলেন, মানুষের কল্যাণে ভূমিকা রাখার স্বার্থে জাতিসংঘকে কাঠামো নয় পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করতে হবে। এই প্রেক্ষাপট থেকে ইইউ সেই শূন্যতা পূরণের জন্য কাজ করছে।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠার ৭৫ বছর পূর্তিতে বৈশ্বিক সংস্থাকে ঢেলে সাজানোর সময় এসেছে। বিশেষ করে জরুরি প্রয়োজনে রাষ্ট্র নয় মানুষের কল্যাণে প্রত্যাশা অনুযায়ী জাতিসংঘকে আরো দায়িত্বশীল ভূমিকা জরুরি হয়ে পড়েছে। কারণ জাতিসংঘের ভূমিকা নিয়ে অনেকের মাঝে হতাশা রয়েছে।