মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ২৬ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনার প্রভাবঃ অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটছে হিজড়াদের




মিজান মোহাম্মদ :

কমলা সুন্দরী একজন হিজড়া। নগরীর বিভিন্ন দোকানে দোকানে গিয়ে সাহায্য হিসেবে ৫ টাকা /১০ টাকা সাহায্য হিসেবে হাত পেতে নিতেন। এই সাহায্য আদায়ের জন্য কখনো বা একা আবার কখনো বা যেতেন দল বেঁধে। সারাদিনে যা পেতেন তা দিয়েই চলতো তার দিনানিপাত। শুধু কমলা সুন্দরী নয় এই নগরীতে এমন হাজারো কমলা সুন্দরীর বসবাস। সবাই আজ বড্ড অসহায় মহামারী করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে। না পারছেন কোন কাজ করতে, পারছেন দোকানে দোকানে গিয়ে সাহায্য তুলতে, কারণ দেশে চলছে অঘোষিত লকডাউন।

করোনাভাইরাসের কারণে দেশে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখায় বিপাকে পড়েছেন সমাজের খেটে খাওয়া মানুষ। দিনমজুর, রিকশাচালকদের মতো দিনে আনা দিনে খাওয়া মানুষের কষ্টের শেষ নেই। যদিও ইতিমধ্যে এসব দরিদ্র মানুষকে সহায়তায় সরকার ও বিভিন্ন সংগঠন এগিয়ে এসেছেন। তবে এমন পরিস্থিতিতে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষরা কীভাবে তাদের খাবার জোগাড় করছেন তা নিয়ে হয়তো কেউ ভাবেননি। করোনা সংকটে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের জন্য হৃদয় ছুঁয়ে গেছে- এমন কোনো জনপ্রতিনিধি খোঁজে পাওয়া যায়নি এখনো। তারা যেন মানুষ নয়, দূর কোন গ্রহের প্রানী। তাদের পেট নেই, নেই পেটের খিদে। তাদের নেই সংসারও । তারা কিভাবে আছে এ ভাবনা নেই কারো!

এবিষয়ে হিজড়া কল্যাণ সমিতির সভাপতি সুন্দরী হিজড়া বলেন- দরিদ্র মানুষকে সহায়তায় সরকার ও বিভিন্ন সংগঠন এগিয়ে এসেছেন। আমাদের পাশে কেউ নেই। আমাদের অধিকাংশ সদস্যই এখন বাসায় বাসায় গিয়ে চাল ডাল, নগদ টাকা সাহায্য হিসেবে নিয়ে আসছে। যতটুকু পাচ্ছে তা যথেষ্ট নয়। কারন ভাইরাসের ভয়ে সবাই দরজাও খুলছে না, অনেকে আবার দূর দূর করে তাড়িয়ে দিচ্ছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন সিলেট জেলা সভাপতি মুকির হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের সমাজের যদি সবচেয়ে অবহেলিত কেউ থেকে থাকে, তারা হলেন তৃতীয় লিঙ্গ বা থার্ডজেন্ডার। আমি পার্সোনালি উনাদের আপনি করে বলি। কখনো হিজড়া বলে ডাকি না। কেমন জানি মনে হয় দূরে ঠেলে দিচ্ছি তাই আর কি…।’
তবে, সরকারের পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসলে হয়তো তাদের মানসিক অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন ঘটতো।

সম্পাদক: শাহ সুহেল আহমদ
প্যারিস ফ্রান্স থেকে প্রচারিত

সার্চ/খুঁজুন: