প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া রোগীদের মধ্যে প্রতি চারজনে একজন সুস্থ হয়ে উঠছেন। ভাইরাসটিতে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হলেও মোট মৃত্যুর হার মাত্র ১ শতাংশ বা আরও কম।
ওয়ার্ল্ডওমিটারসের তথ্য অনুযায়ী, করোনায় বিশ্বে গড় সুস্থতার হার ২২ দশমিক ৬২ শতাংশ। প্রাণঘাতী এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর প্রতি চারজনে একজন সুস্থ হয়েছেন।
এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটিতে সুস্থতার হার ৫.৭১ শতাংশ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আক্রান্ত হয়েছে স্পেনে। সেখানে সুস্থতার হার ৩৬.২৬ শতাংশ। যুক্তরাজ্যে এ হার সবচেয়ে কম- ০.৪৩ শতাংশ।
বলা হচ্ছে গুরুতর তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সিন্ড্রোমের (এসএআরএস) রোগী ও ইবোলা রোগীর মৃত্যুহারের তুলনায় করোনায় মৃত্যুহার অনেক কম। এসএআরএসের রোগীর মৃত্যুর হার প্রায় ১১ শতাংশ আর ইবোলা ৯০ শতাংশ।
যদিও মৃত্যুর হার গণনা একেক জনের কাছে একেক রকম। যেমন, স্পেনীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্য অনুসারে, ৭০ থেকে ৭৯ বছর বয়সী করোনার রোগীদের মধ্যে মারা যাওয়ার হার ৫ শতাংশ, ৬০ থেকে ৬৯ বছর বয়সী লোকদের মধ্যে ২.১৬ শতাংশ এবং ৪০ দশকে যারা রয়েছেন তাদের মৃত্যুঝুঁকি মাত্র ০.৩ শতাংশ।
জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক আর্টুরো কাসাদেভালের মতে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের কাছ থেকে অ্যান্টিবডিগুলো সংগ্রহ করে সেগুলো ঝুঁকিতে থাকা লোকদের সুরক্ষার জন্য ব্যবহার করা যায়।
অস্ট্রেলিয়ান গবেষক অধ্যাপক ক্যাথরিন কিডজারকা করোনাভাইরাসের জন্য দুটি ওষুধ পরীক্ষা করছেন। তারা নির্ণয় করতে পেরেছে, কিভাবে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে। গবেষণাটি নেচার মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছিল।
বাংলাদেশ সময় রোববার রাত সাড়ে ৭টা পর্যন্ত ওয়ার্ল্ডোমিটারসের তথ্য অনুযায়ী- বিশ্বে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্য ১ লাখ ৯ হাজার ৯৫১, আক্রান্ত ১৭ লাখ ৯৫ হাজার ১৮৩। সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন ৪ লাখ ১১ হাজর ৮৩০ জন। মৃতের সংখ্যায় শীর্ষে ওঠা যুক্তরাষ্ট্রে সর্বমোট মৃত্যু হয়েছে ২০ হাজার ৫৮০ জনের। মোট আক্রান্ত ৫ লাখ ৩৩ হাজার ১১৫ জন। দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ১৮৩০ জন।
মৃতের সংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের পরেই রয়েছে ইতালি। দেশটিতে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ১৯ হাজার ৪৬৮। মোট আক্রান্ত ১ লাখ ৫২ হাজার ২৭১। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৬১৯ জনের।
স্পেনে প্রাণহানি হয়েছে ১৬ হাজার ৬০৬। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৬৩ হাজার ২৭ জন। ইউরোপের আরেক দেশ ফ্রান্সে মৃতের সংখ্যা ১৩ হাজার ৮৩২। মোট আক্রান্ত ১ লাখ ৩০ হাজার ৭২৭।
যুক্তরাজ্যে মোট মৃত্যু হয়েছে ৯ হাজার ৮৯১ জনের। আক্রান্ত ৭৯ হাজার ৮৬৫ জন।
রাশিয়ায় একদিনে রেকর্ড ২১৮৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৭৭০ জন।
শনিবার দেশটিতে মারা গেছেন আরও ২৪ জন। এ নিয়ে সেখানে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩০। আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকায় রাজধানী মস্কোয় বৃহত্তম হাসপাতাল তৈরির ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া।
জার্মানিতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৮২১ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ২০ হাজার ৪৭৯।
২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ১২৯ জনের। দেশটিতে মোট মারা গেছেন ২৬৭৩ জন।