কান্নার হাহাকারে গুমোট পৃথিবী। মৃত্যুশোকে পাথর হয়ে গেছেন পৃথিবীর মানুষ। কোভিড-১৯ যে ভয়ঙ্কর হানা দিয়েছে সারাবিশ্বে। গোটা বিশ্বে আজ লকডাউন চলছে।
সৃষ্টির পর পৃথিবীতে এত বড় মহামারী আর হয়নি। বিগত শতাব্দীর মহামারীগুলোতে এর চেয়ে বেশি মানুষ মারা গেলেও তা ছিল নির্দিষ্ট অঞ্চলভিত্তিক। একসঙ্গে সারাবিশ্বে এত ভয়ঙ্কর মৃত্যুথাবা আর কোনো দিন হয়নি।
অনেকের মতে, এ যেন পৃথিবীর অকৃতজ্ঞ মানুষের ওপর প্রকৃতির মস্ত বড় অভিমান। বিবেককে জাগ্রত করার সময় এখনই।
মানুষ এখন ক্ষমতার প্রদর্শনী আর নিরীহ মানুষের ওপর নিপীড়নের প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। বেপরোয়া জীবন, অবাধ যৌনতা, মানব হত্যা, শিশু হত্যা, গণহত্যা, দুর্বলের ওপর সবলের অত্যাচার, ক্ষমতার দম্ভ, নিপীড়ন, জবরদখল, ব্যভিচার, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, রাহাজানি, অন্যের সম্পদ দখল, মানবপাচার, নারী ও শিশুপাচার, এতিমের অধিকার হরণ, এতিমের সম্পদ দখল, ঠকবাজি, শঠতা, প্রহসন, পরশ্রীকাতরতা, হিংসা, বিদ্বেষ ইত্যাদি পাপাচার যারপরনাই বেড়ে গেছে।
ভয়ঙ্কর করোনাভাইরাসটি জাতভেদ চিনে না, চিনে না ক্ষমতাবান আর ক্ষমতাহীনের পার্থক্য, চিনে না গরিব-ধনীর পার্থক্য, চিনে না রাষ্ট্রভেদ আর পরাশক্তি কেও এবং চিনে না শৌর্যবীর্যবানদেরও। বাদ যায়নি ব্রিটিশ সিংহাসনের উত্তরাধিকারী ব্রিটেনের রাজপরিবারের প্রিন্স চার্লসও । বাদ যায়নি কোনো দেশ ও জাতি।
জাতীয় তথা বৈশ্বিক এ দুর্যোগে বাংলাদেশ সরকার পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতোই জাতির বৃহত্তর কল্যাণের স্বার্থে অত্যন্ত অত্যাবশ্যকীয় স্থিতাবস্থা ঘোষণা দিয়েছে, যা ছাড়া এই মহামারী থেকে মুক্তি ও পরিত্রাণের কোনো উপায় নেই। রাষ্ট্রীয় এই আদেশ রাষ্ট্রের বৃহত্তর কল্যাণে সবাইকে মেনে চলা উচিত।
কমিউনিটি ডিসটেন্সিং এখন আপাতত প্রথম কাজ, সঠিকভাবে এই মহাযুদ্ধে জিততে হলে। কিন্তু এই সোশ্যাল ডিসটেন্সিং নিশ্চিতকরণের জন্য সরকার কর্তৃক গৃহীত এ দেশব্যাপী অচলবস্থায় কেমন আছেন এ দেশের গরিব, অসহায় ও নিম্নআয়ের মানুষগুলো?
কাজে না গেলে তার আজকের দিনের ঘরের চাল কেনার টাকা জোগাড় হবে না, এমন লাখে মানুষ রয়েছে আমাদের দেশে। যদি দেশের প্রতি ভালোবাসা থেকে থাকে, তবে এই পাশে দাঁড়ান। সবাই মিলে জয় করি এ নতুন যুদ্ধ।
লেখক : শিক্ষক ও প্রাবন্ধিক