করোনাভাইরাসের মহামারীর মধ্যে সরকার বিধিনিষেধ শিথিল করায় ইমাম,খতিব ও খাদেমদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা জুমার নামাজে অংশ নিতে একমাস পর মুসল্লিরাও মসজিদে প্রবেশের সুযোগ পেলেন ।
ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে বুধবার ১২টি শর্ত দিয়ে স্বাস্থ্য বিধি মেনে মসজিদে মুসল্লিদের জুমায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়ার পর শুক্রবার রাজধানীর মসজিদগুলোতে বড় পরিসরে জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
মসজিদগুলোর প্রবেশপথে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা ছিল এবং স্বাস্থ্য বিধিসহ শর্তগুলো মেনেই মুসল্লিদের মসজিদের প্রবেশ করতে দেখা গেছে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ সংশ্লিষ্টরা জানান।
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের প্রবেশ পথগুলোতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার হাতে নিয়ে দুজন দাঁড়িয়ে থেকে মুসল্লিদের হাতে দিয়েছেন।
পল্টন থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক বলেন, পল্টন থানা এলাকায় বায়তুল মোকাররমসহ সাতটি মসজিদ রয়েছে। প্রতিটি মসজিদে নামাজের আগে ইমামদের সঙ্গে বৈঠক করে স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে বৈঠক হয়েছে।
প্রায় সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনেই জুমার নামাজ আদায় করেছে বলে আমার কাছে মনে হয়েছে।”
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আনিস মাহমুদ বলেন, “আমি নিজেও বায়তুল মোকাররম মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেছি। মোটামুটি সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনেই চলেছে।
“তারপরও কিছু পাগলামি’ থাকে,বয়ষ্করাও আসতে চায় মসজিদে।”
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, শিশু, বয়োঃবৃদ্ধ, যে কোনো অসুস্থ ব্যক্তি ও অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তিরা মসজিদের জামায়াতে অংশ নিতে পারবেন না।
মহাপরিচালক বলেন, “তারপরও বলবো, সারাদেশে প্রায় দুই লাখ ৬৮ হাজার মসজিদের সুন্দরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই নামাজ আদায় করার খবর পেয়েছি।”
এদিকে মসজিদের নামাজ আদায় করতে পেরে খুশি মুসল্লিরাও। পুরান ঢাকার বাসিন্দা রাশেদুল ইসলাম জুমার নামাজ আদায় করেছে নারিন্দার একটি মসজিদে।
তিনি বলেন, “শুকরিয়া, সুন্দরভাবে সবাই দূরে দূরে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করেছি। এভাবে সবাই সচেতন হলে সংক্রমণের আশঙ্কা অনেক কমে যাবে ।”
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর গত ৬ এপ্রিল দেশের সব মসজিদে বাইরে থেকে মুসল্লি ঢোকার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার। বলা হয়, ইমাম-মুয়াজ্জিনসহ মসজিদের খাদেমরা মিলে পাঁচজনের জামাত হবে। আর জুমার নামাজে থাকতে পারবেন মসজিদসংশ্লিষ্ট ১০ জন।
এরপর ২৩ এপ্রিল আরেক আদেশে রমজানে মসজিদে তারাবির জামাতে সর্বোচ্চ ১২ জনের অংশগ্রহণের সীমা ঠিক করে দেয় ধর্ম মন্ত্রণালয়। সেখানেও বাইরের কারও যোগ দেওয়ায় নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকে।
কড়াকড়ি শুরুর এক মাসের মাথায় তা শিথিলের কথা জানিয়ে বুধবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেম ওলামাগণও পবিত্র রমজানুল মোবারক মাসের গুরুত্ব বিবেচনা করে মসজিদে নামাজ আদায়ের শর্ত শিথিল করার জন্য প্রধানমন্ত্রী বরাবর জোর দাবি জানিয়েছেন।
“সম্প্রতি সরকার সার্বিক বিবেচনায় কিছু কিছু ক্ষেত্রে বন্ধ ঘোষণার নিষেধাজ্ঞা শিথিল করেছে। তৎপ্রেক্ষিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ কর্তৃক জারিকৃত নির্দেশনাবলি অনুসরণপূর্বক ৭ মে, ২০২০ তারিখ জোহরের ওয়াক্ত থেকে সুস্থ্ মুসল্লিদের মসজিদে জামায়াতে নামাজ আদায়ের সুযোগ প্রদানের পরামর্শ প্রদান করেছে।”