সোমবার, ৭ অক্টোবর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ২২ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অনলাইনে শিশুর ভয়ংকর পর্নোগ্রাফি, কেরালায় ৪৭ জন গ্রেপ্তার




সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞা, পুলিশি ধরপাকড়, অনলাইন পর্ন সাইট লক করেও বন্ধ করা যায়নি ভারতে শিশু পর্নোগ্রাফি। সাইবার জগতের এই অন্ধকারময় অপরাধের তালিকায় কেরালা রয়েছে সামনের সারিতে। চাইল্ড পর্নোগ্রাফি মেটিরিয়াল অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকায় এবার ৪৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশের তদন্তের রিপোর্ট বলছে, লকডাউনের এই সময়টাতেই কেরালায় চাইল্ড পর্নোগ্রাফি মেটিরিয়ালের চাহিদা বেড়েছে প্রায় ১২০ শতাংশ।

অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর জেনারেল মনোজ আব্রাহামের নেতৃত্বে পুলিশের স্পেশাল টিম রাজ্যের নানা জায়গায় ‘পি-হান্ট ২০.১’ অপারেশন চালাচ্ছে। এডিজি মনোজ আব্রাহাম বলছেন, রাজ্যের ১১৭টি জায়গায় অপারেশন চালিয়েছে কেরালা পুলিশের ‘কাউন্টারিং চাইল্ড সেক্সুয়াল এক্সপ্লয়টেশন টিম’ (সিসিএসই)। তাতেই সামনে এসেছে ভয়ঙ্কর তথ্য। এরই মধ্যে ৮৯ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শিশুদের উপর যৌন নিপীড়ন, অত্যাচার, ধর্ষণের ছবি, ভিডিও তথা ‘চাইল্ড সেক্সুয়াল অ্যাবিউজ মেটিরিয়াল’ (সিএসএএম) অনলাইনে আপলোড করা এবং শিশুদের নিয়ে নীল ছবি বানানোর বড়সড় চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে কেরালায়। এর আগেও শিশু পর্নোগ্রাফি চক্রের ৫৮ জনকে গ্রেফতার করেছিল কেরালা পুলিশের স্পেশাল টিম। শনিবার ফের এমনই একটি চক্রের পর্দা ফাঁস করেছে পুলিশ।
পুলিশ বলছে, লকডাউনের সময় ঘরে আটকে রেখে শিশুদের উপর যৌন নির্যাতনের মাত্রা বেড়েছে। শারীরিক নির্যাতন, যৌন হেনস্থা, শিশুদের শরীরের নানা অঙ্গের আপত্তিকর ছবি, যৌন নির্যাতনের ভিডিও অনলাইনে আপলোড করা হয়েছে। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপ এই কাজে সক্রিয়। এমনকি আন্তর্জাতিক চাইল্ড পর্নোগ্রাফি চক্রের সঙ্গেও যোগ রয়েছে তাদের।

‘কাউন্টারিং চাইল্ড সেক্সুয়াল এক্সপ্লয়টেশন টিম’ তথা সিসিএসইয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, ভারতে চাইল্ড পর্নোগ্রাফির ওয়েবসাইটগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাই বিভিন্ন সফটওয়্যার অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে এই ধরনের ছবি ও ভিডিও আপলোড করার কাজ চলছে। কী ধরনের সফটওয়্যাল টুল ব্যবহার করা হচ্ছে সেটা খতিয়ে দেখছেন সাইবার বিশেষজ্ঞরা। বেশ কিছু আইপি অ্যাড্রেস বার করা হয়েছে যেখান থেকে চাইল্ড পর্নোগ্রাফি মেটিরিয়াল অনলাইনে আপলোড হয়েছে। এই সূত্র ধরেই গোটা চক্রটাকেই ধরে ফেলা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর একটি সমীক্ষা বলেছে, ২০০৮ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত এই ১০ বছরে শিশুদের উপর যৌন নির্যাতনের ঘটনা প্রায় ৬ গুণ বেড়েছে। চাইল্ড পর্নোগ্রাফির ক্ষেত্রেও ২০১৮ সালের পরিসংখ্যান অবাক করার মত । সাম্প্রতিক লকডাউনের সময় শিশু পর্নোগ্রাফির চাহিদা ও অনলাইনে চাইল্ড পর্নোগ্রাফি মেটিরিয়ালের সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। কেরালা শুধু নয় কলকাতাতেও শিশু পর্নোগ্রাফির চাহিদা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করেছে ইন্ডিয়ান চাইল্ড প্রোটেকশন ফান্ড (আইসিপিএফ)।

সম্পাদক: শাহ সুহেল আহমদ
প্যারিস ফ্রান্স থেকে প্রচারিত

সার্চ/খুঁজুন: