বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Sex Cams

প্রজ্ঞার বাজেট প্রতিক্রিয়া ২০২০-২১: তামাকপণ্যে কর ও মূল্যবৃদ্ধির তাগিদ




ঢাকা ব্যুরো:

বাজেটের অর্থায়নের চাহিদা পূরণে তামাকপণ্যে কর ও মূল্যবৃদ্ধির তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এ ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং তামাকবিরোধীদের দাবি অনুযায়ী বাজেটে তামাক কর ও মূল্যবৃদ্ধি সংক্রান্ত প্রস্তাব গ্রহণ করা উচিত।

তা হলে তামাকপণ্যের ব্যবহার কমার পাশাপাশি এ খাত থেকে ১১ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত রাজস্ব আয় সম্ভব।

এই অর্থ করোনা মোকাবেলা সংক্রান্ত থোক বরাদ্দ এবং প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে ব্যয় করার সুযোগ রয়েছে।

প্রস্তাবিত ২০২০-২১ বাজেটে এসব প্রস্তাব উপেক্ষিত হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন অর্থনীতিবিদ, গণমাধ্যমকর্মীসহ তামাকবিরোধীরা।

সোমবার প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স– আত্মার উদ্যোগে ২০টি তামাকবিরোধী সংগঠন আয়োজিত অনলাইন বাজেট প্রতিক্রিয়া অনুষ্ঠানে এসব কথা বলা হয়।

ভার্চুয়াল বাজেট প্রতিক্রিয়ায় অংশ নেন অর্থনীতিবিদ এবং জাতীয় তামাকবিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো অর্থনীতিবিদ ড. নাজনীন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুমানা হক, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) রিসার্চ ডিরেক্টর ড. মাহফুজ এবং টিভি টুডের এডিটর ইন মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল প্রমুখ।

এ সময় জানানো হয়, প্রস্তাবিত বাজেটে মাথাপিছু আয়বৃদ্ধির তুলনায় সিগারেটের নামমাত্র মূল্যবৃদ্ধির ফলে সিগারেটের প্রকৃতমূল্য হ্রাস পাবে ও ব্যবহার বাড়বে।

অন্যদিকে টানা চতুর্থ বছরের মতো সিগারেটের সম্পূরক শুল্ক প্রায় অপরিবর্তিত রাখায় লাভবান হবে তামাক কোম্পানিগুলো।

সিগারেটের মূল্যস্তর অপরিবর্তিত রাখায় ভোক্তার স্তর পরিবর্তনের সুযোগ অব্যাহত থাকবে এবং কোম্পানি করফাঁকির সুযোগ পাবে। বিড়ি এ গুলের অতিসামান্য মূল্যবৃদ্ধি দরিদ্র মানুষের মধ্যে এসব পণ্যের ব্যবহার নিরুৎসাহিত করবে না। বিড়ির সম্পূরক শুল্কও টানা চার বছর অপরিবর্তিত রাখায় বিড়ি ব্যবসা লাভজনক হবে।

প্রস্তাবিত বাজেটে সম্পূরক শুল্কের একটি অংশ সুনির্দিষ্ট কর আকারে আরোপ এবং সব তামাকপণ্যের ওপর ৩ শতাংশ হারে সারচার্জ আরোপের দাবি আমলে না নেয়ায় সরকার ব্যাপক পরিমাণে রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হবে।

এ ছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা তামাককে করোনা সংক্রমণ সহায়ক হিসেবে চিহ্নিত করে এর ব্যবহার নিরুৎসাহিতকরণে জোর তাগিদ দিয়ে এলেও প্রস্তাবিত বাজেটে এর কোনো প্রতিফলন নেই।

ফলে দেশের প্রায় চার কোটি তামাক ব্যবহারকারীর মধ্যে মারাত্মক করোনা সংক্রমণঝুঁকিসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়বে।

ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, আমরা বারবার বলছি, তামাকের ক্ষতি থেকে মানুষকে রক্ষার জন্য তামাকপণ্যের কর ও মূল্য বাড়াতে হবে। কিন্তু সেটির বাস্তবায়ন হচ্ছে না। আমাদের উন্নয়ন দর্শন এখন বাজার অর্থনীতিনির্ভর হয়ে গেছে সুতরাং জনস্বাস্থ্য অগ্রাধিকার পাচ্ছে না।

সাংবাদিক এবং টিভি টুডে’র এডিটর মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন। কিন্তু যারা এটা বাস্তবায়ন করবেন সেই নীতিনির্ধারকদের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে।

ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, তামাকপণ্যের কর ও দাম বাড়ানোর সবচেয়ে বড় সুফল হচ্ছে তরুণ প্রজন্মকে তামাক ব্যবহার শুরু করা থেকে নিরুৎসাহিত করা।

সম্পাদক: শাহ সুহেল আহমদ
প্যারিস ফ্রান্স থেকে প্রচারিত

সার্চ/খুঁজুন: